উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশি ঋণের উপর নির্ভরশীলতা বাড়লেও ঋণ শোধের চাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাড়ে ১৫ বছরে নেওয়া ঋণের বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে বলে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এতে প্রকল্পগুলো থেকে প্রত্যাশিত আয় না আসায় ঋণ শোধে সরকারের নিজস্ব তহবিল ব্যবহার করতে হচ্ছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্যমতে: চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বিদেশি ঋণছাড় হয়েছে ১২০ কোটি ২০ লাখ ডলার, কিন্তু পরিশোধ করতে হয়েছে ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ডলার।
- আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ১১০ কোটি ডলার, যা এবার বেড়ে ৩৩ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।
- বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৩৩৫ কোটি ডলার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
ইআরডি জানায়, পদ্মা রেল সংযোগ, মেট্রোরেল ও কর্ণফুলী টানেলের মতো প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হওয়ায় চাপ বেড়েছে। তবে পদ্মা রেল সংযোগ ও কর্ণফুলী টানেল থেকে প্রত্যাশিত আয় আসছে না।
- চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে মাত্র ২৫ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরে ছিল ৩৬২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। সরকার পরিবর্তনের কারণে ঋণচুক্তির প্রস্তাবগুলো নতুন করে পর্যালোচনা হচ্ছে, ফলে ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে।
আরও পড়ুনঃ ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ পুরস্কার ২০২৪: মনোনয়ন তালিকা প্রকাশিত
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সিকিউরড ওভারনাইট ফিন্যান্সিং রেট (এসওএফআর) বেড়ে ৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ফলে বাজারভিত্তিক ঋণের সুদ বাবদ বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে।
আইএনএম-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেছেন, প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি কম হওয়ায় অর্থছাড় কমেছে। তিনি এটিকে সাময়িক মনে করছেন এবং কাজের গতি বাড়লে অর্থছাড় বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
এই পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতির উপর উল্লেখযোগ্য চাপ সৃষ্টি করছে। সময়মতো উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন এবং ঋণের ব্যবস্থাপনায় কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি।