মোঃ আবু হায়াৎ, সুনামগঞ্জ (জেল) প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের সদর উপজেলার কুরবাণ নগর ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্রণগাঁও গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবার নদীভাঙনের কারণে দিশেহারা। ইতিমধ্যে আড়াই শতাধিক পরিবার তাদের বসতভিটা, চারটি মন্দির এবং দুটি মসজিদ হারিয়েছে। নদীর তীরে বসবাসকারী এই ভূমিহীন ও দিনমজুর পরিবারগুলো কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবে চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছে।
ব্রাক্ষ্রণগাঁও গ্রামে ২০০৯ সাল থেকে শুরু হওয়া নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সুরমা নদীর পানি কমতে শুরু করার পর গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে আরও শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারানোর শঙ্কায় রয়েছে।
গ্রামের ভূমিহীন মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমার তিনটি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানের এই শেষ সম্বলটুকুও নদীর গর্ভে চলে যেতে পারে। সরকারের কাছে আমার একটাই দাবি, আমাদের গ্রামটিকে বাঁচান।”
কুরবাণ নগর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “আমি বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে গ্রাম রক্ষার দাবি জানালেও কথার সঙ্গে কাজের মিল পাইনি। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পুরো গ্রামই বিলীন হয়ে যাবে।”
ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল বরকত বলেন, “নদীভাঙনের কারণে এই গ্রামসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম বিপর্যস্ত। ২০০৯ সাল থেকে নদীভাঙন রোধে কার্যকর উদ্যোগের অভাবে মানুষ বাড়িঘর হারাচ্ছে। বর্তমান সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করি।”
আরও পড়ুনঃ শিক্ষক-ক্লাসরুম অপ্রতুলতার মধ্যেই বুটেক্সে নতুন বিভাগ চালু, সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
সুনামগঞ্জ-১ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, “২০২৩ সালে নদীভাঙন রোধে একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলেই প্রটেকশন ওয়াল নির্মাণ এবং বস্তা ফেলে নদীভাঙন রোধে কার্যক্রম শুরু হবে।”
ব্রাক্ষ্রণগাঁওয়ের হাজারো মানুষ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাদের বসতভিটা ও জীবন রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। না হলে চৈত্র মাসের আগেই পুরো গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।