
কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রশাসনের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আহত ৩০ শিক্ষার্থীকে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী।
আহত শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে আন্দোলনের স্মৃতিচারণ এবং পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ মিয়া কাউসার বলেন, “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো পুরোপুরি বিপ্লবের চেতনা ধারণ করতে পারেনি। সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিন্তু বিপ্লবীদের জীবন আতঙ্কে কাটছে। আমাদের আন্দোলন ছিল বৈষম্য ও অন্যায় দূর করার জন্য।”
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাম্মল হোসেন আবির বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেরিতে হলেও আহতদের স্মরণ করেছে, তবে বিপ্লব-পরবর্তী যে শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস চেয়েছিলাম, তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। ক্যাম্পাসে মাদক নিয়ন্ত্রণ এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তোমাদের মতো বীর শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে পেরে গর্ববোধ করছি। সরকার এখনো আহতদের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তোমাদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া আমরা শুনেছি, তবে সীমাবদ্ধতাগুলোকেও বিবেচনা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সিদ্ধান্ত আলোচনার ভিত্তিতে হবে।”
আরও পড়ুনঃ হিম উৎসবে ঘুরতে এসে জাবির ছাত্রী হলে যুবক আটক
তিনি আরও বলেন, “আগে অনেকেই স্বৈরাচারের হয়ে কাজ করতেন। এখন তাদের মধ্যে অনেকেই সমন্বয়কের ভূমিকায় আছেন। নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণে আমরা প্রতিনিয়ত ঝামেলায় পড়ছি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের এগিয়ে যাওয়া চ্যালেঞ্জিং।”
প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, “আমাদের দায়িত্ব ছিল চেকগুলো তোমাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া। এই প্রজন্ম বুঝিয়ে দিয়েছে সংগ্রামের পথেই মুক্তি সম্ভব। তোমরাই জাতির সূর্য সন্তান। আমরা সবসময় তোমাদের পাশে আছি।”
অনুষ্ঠানটি স্মৃতিচারণ ও আহতদের পাশে দাঁড়ানোর একটি প্রয়াস হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ এবং বিপ্লবের চেতনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।