
মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাজশাহী কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, অন্যান্য সরকারি কলেজের তুলনায় রাজশাহী কলেজে কয়েকগুণ বেশি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা তাদের জন্য বড় ধরনের আর্থিক চাপ সৃষ্টি করেছে।
কলেজ প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৩ মার্চ থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত ফরম পূরণ চলবে। পরদিন প্রকাশিত আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়ভিত্তিক ফি নির্ধারণ করা হয়, যেখানে দেখা যায়, রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন বিষয়ে ফি ৭,৫৯১ টাকা থেকে ৯,১৭১ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ রংপুর কারমাইকেল কলেজে এই ফি ৪,২৭৫ থেকে ৪,৭৫০ টাকার মধ্যে রাখা হয়েছে এবং রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজেও প্রায় ২,০০০ টাকা কম নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল মাজেদ এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “এই অস্বাভাবিক ফি পরিশোধ করা অধিকাংশ শিক্ষার্থীর জন্য কষ্টসাধ্য। অনেকের পক্ষেই তা সম্ভব নয়। সকল শিক্ষার্থীর উচিত কলেজ অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করা এবং তাতে প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর নিশ্চিত করা।”
রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ (আবির) অভিযোগ করে বলেন, “এখানে অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে, যাদের বাবা কৃষক, ভ্যানচালক, শ্রমিক। অনেক শিক্ষার্থী নিজেও উপার্জন করে পড়ার খরচ চালায়। অথচ কলেজ প্রশাসন ক্রমাগত ফি বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের বিপাকে ফেলছে।”
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী কলেজ শাখার সভাপতি মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, “রাজশাহী কলেজ দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের। কলেজ প্রশাসন নির্ধারিত ফি শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
আরও পড়ুনঃ দুধ পান করানো মায়েদের রোজায় যত্ন: সুস্থতা ও সতর্কতা
অতিরিক্ত ফি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. যহুর আলী বলেন, “বিগত বছরের তুলনায় এবার ফি কম রাখা হয়েছে। অন্যান্য কলেজের সঙ্গে তুলনা করে লাভ নেই, আমাদের নিজস্ব নীতিমালার ভিত্তিতেই ফি নির্ধারণ করা হয়।”
কোন কোন খাতে টাকা নেওয়া হচ্ছে বা অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলেন, “আপনার কাছে কি প্রমাণ আছে?” এরপর তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানাবেন বলে আশ্বাস দিলেও পরে আর কোনো উত্তর দেননি।
শিক্ষার্থীরা ফি কমানোর দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন, তবে কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।