spot_img

― Advertisement ―

spot_img

কুরবানির গরু কেমন হতে হবে? ইসলাম কী বলে?

আলোকিত দর্পণ ডেস্ক: পবিত্র ঈদুল আজহার অন্যতম মূল বৈশিষ্ট্য হলো কুরবানি। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে সামর্থ্যবান মুসলমানেরা পশু কোরবানি করে থাকেন। তবে এই...
প্রচ্ছদফিচারResearch and Development (R&D) ক্যারিয়ার: জ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তির বাস্তবায়নের সংযোগস্থল

Research and Development (R&D) ক্যারিয়ার: জ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তির বাস্তবায়নের সংযোগস্থল

গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) শুনলেই অনেকের চোখে ভেসে ওঠে ল্যাবের টেবিল, কাগজে-কলমে তত্ত্ব আর গবেষকদের গম্ভীর মুখ। আমারও প্রথমে তাই মনে হতো। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই নিজেকে গবেষণার কাজে নিযুক্ত করার পর আমার ধারণা সম্পূর্ণ পালটে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন এবং এর পরবর্তী সময়ে সর্বমোট ১২ টি প্রযুক্তি নির্ভর গবেষণার সাথে আমার সরাসরি সম্পৃক্ত হবার সুযোগ হয়েছে এবং বর্তমানে গবেষণা সহকারী হিসেবে একটি চইনিজ প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত আছি। এই সকল অভিজ্ঞতা থেকে একটি বিষয় খুব স্পষ্ট ভাবে অনুধাবন করেছি যে, নিজের সক্ষমতা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য Research and Development (R&D) আসলে বেশ জীবন্ত এবং প্রানবন্ত একটি জায়গা। এটা শুধু তত্ত্ব তৈরি বা জার্নালে লেখা ছাপানোর জন্য নয়, বরং বাস্তব জীবনে কাজে লাগে এমন প্রযুক্তি গড়ে তোলার একটা পথ।

ইন্ডাস্ট্রিতে R&D-এর কাজটা একদম অন্যরকম মজার। এখানে গবেষণা মানে শুধু নতুন আইডিয়া নিয়ে ভাবা নয়, সেই আইডিয়াকে এমনভাবে গড়ে তোলা যাতে সেটা মানুষের হাতে পৌঁছে যায়। ধরুন, IEEE-এর মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠান আছে, যারা গবেষণার জন্য অর্থায়ন করে। এই ফান্ডিং পেলে আপনি একটি প্রকল্প শুরু করতে পারেন যেমন নবায়নযোগ্য শক্তি বা স্মার্ট গ্রিড নিয়ে। প্রথমে গবেষণা করে দেখতে হয় কীভাবে এটা সম্ভব, তারপর সেটাকে প্রোটোটাইপে রূপ দিয়ে বাস্তবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয়।

মজার ব্যাপার হলো, এই প্রক্রিয়ায় আপনি শুধু গবেষকই থাকেন না, একজন সমাধানদাতাও হয়ে ওঠেন। কোম্পানিগুলো এমন লোক চায়, যারা গবেষণার পাশাপাশি বাজারে কী চলবে, কীভাবে খরচ কমিয়ে বেশি ফল পাওয়া যাবে এসবও ভাবতে পারে। তাই R&D-এর মাধ্যমে আপনি একটি আইডিয়া থেকে শুরু করে পুরো প্রযুক্তি তৈরি পর্যন্ত যেতে পারেন, যেটা পরে হয়তো লাখো মানুষের জীবন সহজ করে দেবে।

কী লাগবে এই পথে চলতে?
প্রথমত, প্রযুক্তির সঙ্গে একটু গভীর দোস্তি গড়ে তুলতে হবে—MATLAB, Python বা AI-এর মতো টুলগুলো আপনার হাতের তালুর মতো চেনা থাকা চাই। তারপর দরকার সমস্যা সমাধানের একটি স্বাভাবিক ঝোঁক—যেমন শক্তির অপচয় কমানোর কৌশল বা নতুন কিছু বানানোর চমকপ্রদ আইডিয়া। এছাড়া, নতুন জিনিস শেখার আনন্দ থাকতে হবে, কারণ R&D মানেই প্রতিদিন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া। আর শেষে, দলের সঙ্গে মিলে কাজ করার উৎসাহ ও আপনার ভাবনাগুলো সহজে সবাইকে বোঝানোর ক্ষমতা—এটা না থাকলে ইন্ডাস্ট্রিতে পথ চলা কঠিন হয়ে যায়।

R&D শুধু গবেষণা নয়, এটা এমন একটি জায়গা যেখানে আপনি স্বপ্ন দেখেন এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেন। গবেষণার মজা পেতে চাইলে আর প্রযুক্তি দিয়ে দুনিয়ায় একটি ছাপ রাখতে চাইলে, R&D আপনার জন্য একটি দারুণ রাস্তা। এটা কেবল ক্যারিয়ার নয়, একটি গল্প—যেখানে গবেষণা আর প্রযুক্তি হাত ধরে ভবিষ্যৎ গড়ে।

আরও পড়ুনঃ সোলার সাইকেল: চলমান দাবদাহের অন্যতম প্রাকৃতিক কারণ

আমার গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা:

• University of Malaysia, Sarawak-এর সাথে গবেষণা সহযোগিতা (২০২৫) ।
• চীনের বেইজিং সিটি ইউনিভার্সিটির সাথে ২টি প্রকল্পে গবেষণা সহযোগিতা (২০২৪)।
• Smart DC Microgrid Prototype for Renewable Energy Integration নিয়ে জুলাই ২০২৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত কাজ, এর উপর একটি IEEE পেপার প্রকাশিত, BUBT দ্বারা অর্থায়িত।
• AI-Powered Tic-Tac-Toe Game for Cognitive Analysis প্রকল্পে ডিসেম্বর ২০২২ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত কাজ, BUBT দ্বারা অর্থায়িত।
• BUBT থেকে IEEE conference পেপার প্রকাশের জন্য ৩টি গবেষণা অনুদান।
• ৬টি IEEE conference পেপার এবং ৮টি পিয়ার-রিভিউড জার্নাল পেপার প্রকাশ।
• ৩টি IEEE conference-এর রিভিউয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন।
• ১টি জার্নালের রিভিউয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন।
• IEEE-তে ১টি প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা (চলমান)।
• বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) মন্ত্রণালয়ে ১টি প্রকল্প জমা (চলমান)।

লেখকঃ
সাইফুল ইসলাম তুহিন
গবেষণা সহকারী, রিসার্চ এক্সপার্ট (গবেষণা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, চীন)
বি.এস.সি ইন ইইই (ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং)
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি)
চেয়ারপারসন, আইইইই বিইউবিটি স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চ (২০২২-২৩)।