
মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ “প্রাণের টানে এসো মিলি প্রিয় প্রাঙ্গণে”—এই স্লোগান ধারণ করে রাজশাহী কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলনী-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ৯টায় কলেজ মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এই দিনব্যাপী মিলনমেলার শুভ সূচনা হয়।
প্রধান অতিথি বেলুন উড়িয়ে পুনর্মিলনী উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এরপর সকাল ১০টায় বিভাগীয় একটি বর্ণাঢ্য র্যালি কলেজ চত্বর থেকে বের হয়ে সোনাদিঘি মোড় প্রদক্ষিণ করে পুনরায় কলেজ মাঠে ফিরে আসে। অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেন এলামনাই কমিটির সদস্যরা। পরে ধর্মগ্রন্থ কোরআন ও গীতা পাঠের মাধ্যমে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রয়াত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
দিবসব্যাপী পুনর্মিলনীতে ছিল শোভাযাত্রা, ধর্মগ্রন্থ পাঠ, স্বাগত বক্তব্য, স্মৃতিচারণ, স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন, সম্মাননা স্মারক প্রদান, লটারি, খেলাধুলা, পুরস্কার বিতরণ এবং জমকালো আতশবাজিসহ সাংস্কৃতিক আয়োজন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. ইব্রাহিম আলী। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর পার্থ সারথি বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির সদস্য ও উপদেষ্টামণ্ডলী স্বাগত বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন বর্ষের প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন এবং প্রাক্তন শিক্ষক ও কৃতী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা প্রদান এই মিলনমেলায় আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি করে।
অধ্যাপক আজমত আলী রকি বলেন, “এত আনন্দ আর উচ্ছ্বাস দেখে মনে হচ্ছে, এই পুনর্মিলনী এত দেরিতে কেন হলো! আফসোস করছি আগে কেন করা হয়নি।”
প্রফেসর পার্থ সারথি বিশ্বাস বলেন, “এই আয়োজনের মাধ্যমে আমি শিক্ষক হিসেবে সকল প্রাক্তনের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। চাই এই ধারা অব্যাহত থাকুক।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাধ্যক্ষ এলামনাই কমিটিকে একটি স্থায়ী কাঠামো গঠনের আহ্বান জানান, যাতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষায় সহায়তা পায়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ বলেন, “এমন মিলনমেলার মাধ্যমে প্রাক্তন ও বর্তমানদের মধ্যে যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়, তা ভবিষ্যতে অনেক কাজে আসে। নতুনরা পুরনোদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়।”
আরও পড়ুনঃ ইবিতে ঐক্যমঞ্চের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠিত
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার বলেন, “এই মিলনমেলার মাধ্যমে আমরা একটি সম্পর্কের বন্ধন গড়ে তুলেছি। মনোবিজ্ঞান বিভাগের এ আয়োজন যেন বারবার হয়, সেই প্রত্যাশা করছি।”
মধ্যাহ্ন বিরতির পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন, যেখানে গান, কবিতা ও নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে অতীতের স্মৃতি ফিরে আসে অংশগ্রহণকারীদের মনে। বিকেলের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে সকলে ফিরে যান ছাত্রজীবনের স্মৃতির পাতায়। সন্ধ্যায় আতশবাজির ঝলকানিতে শুরু হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। দিনব্যাপী এই আয়োজন প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ফিরে নিয়ে যায় তাদের ফেলে আসা কলেজ জীবনের দিনগুলোতে।