
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ও আলাতুলি ইউনিয়নের কয়েকটি ফেরিঘাটের অনিয়ম ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এবং ঘাট বাতিলের দাবিতে রাজশাহীতে বিশাল মানববন্ধন করেছে চরাঞ্চলের মানুষ।
রোববার (২৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধনে অংশ নেন প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষ।
মানববন্ধন থেকে ভগবন্তপুর পেটাও আলাতুলি আন্তঃজেলা, ফুলতলা ভাটোপাড়া ও বড়গাছী পেটাও বিদিরপুর এবং প্রেমতলী ফেরিঘাটের ইজারা বাতিলের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে চিরতরে ঘাট ইজারা পদ্ধতি বন্ধ করে সাধারণ মানুষের ন্যায্য ও নিরাপদ যাতায়াতের ব্যবস্থা নিশ্চিতের আহ্বান জানান বক্তারা।
বক্তারা অভিযোগ করেন, গত ৫৪ বছর ধরে কিছু প্রভাবশালী ইজারাদার ফেরিঘাটগুলো দখলে রেখে চরবাসীর জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। সরকারি নির্ধারিত ভাড়ার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায়, সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, কখনো কখনো মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। তারা অবিলম্বে এই অনিয়মের অবসান চান।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন। স্লোগান ছিল—”জেগেছে রে জেগেছে চরবাসী জেগেছে”, “চাদাবাজের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও”, “ঘাটের নামে চাঁদাবাজি, চলবে না চলবে না”, “ঘাটের ইজারা বাতিল করো, করতে হবে”, “সংগ্রাম সংগ্রাম, ঘাট বাতিলের সংগ্রাম” ইত্যাদি।
চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম (ভোলা) বলেন, “আমরা বারবার ইজারাদারদের বলেছি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা যাবে না। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। এখন চরবাসী চিরদিনের জন্য ঘাট বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চরবাসী ইমাম হোসেন বলেন, “ঘাটের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলায় আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমরা জিম্মি হয়ে আছি। তাই ঘাট বাতিল ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”
আরও পড়ুনঃ ইবিতে স্টুডেন্ট’স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের বৃত্তি পেল ৩৩৬ শিক্ষার্থী
এ সময় আব্দুল্লাহীল কাফি, মো. মোশারফ হোসেন (ইমন) সহ অনেকে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা চরবাসীর ওপর ঘাট ইজারাদারদের চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেন।
মানববন্ধন শেষে আয়োজকরা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। আলোচনায় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজা হাসান জানান, আগামী ১১ মে থেকে ঘাট পরিচালনার দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের হাতে দেওয়া হবে এবং ঘাট বাতিলের সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।