
মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যারা নির্বাচন ঠেকাতে চায়, তারা দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রের শত্রু। জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না। নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা বদলের পথ রুদ্ধ করতে যারা উঠেপড়ে লেগেছে, তারা সুবিধাবাদী শক্তি।
বৃহস্পতিবার (১ মে) চট্টগ্রামের নাসিমন ভবনের সামনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের আয়োজিত শ্রমিক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “যারা আন্দোলনে ছিল না, তারাই এখন বলছে নির্বাচন না হলেই ভালো। এ ধরনের বক্তব্য গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন ছাড়া কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। যারা নির্বাচনকে থামাতে চায়, তারা দেশের ইতিহাস ও ভবিষ্যতের প্রতি অবমাননাকর আচরণ করছে।”
খসরু আরও বলেন, “বিএনপির ৩১ দফা রোডম্যাপে শ্রমিকদের অধিকার, ন্যায্য মজুরি, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি আছে। কিন্তু বর্তমানে অনির্বাচিত সরকার শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।”
রাখাইন রাজ্যে সম্ভাব্য ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে চলমান আলোচনার বিষয়ে আমির খসরু বলেন, “দেশে যদি নির্বাচিত সরকার থাকত, তাহলে এমন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুতে সংসদে আলোচনা হতো। কিন্তু এখন কোনো স্বচ্ছতা নেই, কোনো জবাবদিহিতা নেই।”
তিনি প্রশ্ন করে বলেন, “জাতিসংঘ বলছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সম্মতিতে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনেই কেবল করিডোর সম্ভব। তাহলে বর্তমানে যারা বাইরে বসে এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তাদের এত সাহস কোথা থেকে আসে?”
প্রধান বক্তা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন আওয়ামীলীগের নিষিদ্ধের দাবি করে বলেন, “শ্রমিকরা বেঁচে থাকলে দেশ বাঁচবে। শহীদ জিয়াউর রহমান নিজে একজন শ্রমিকের বেশে খাল খনন করেছেন। আজও শ্রমিকরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।
তিনি চট্টগ্রামের ৪১টি ওয়ার্ডে শ্রমিকদের জন্য ২০ হাজার টিসিবি কার্ড, নাগরিক কার্ড এবং ভাতা সুবিধার ব্যবস্থা করার ঘোষণা দেন।
গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, “ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটেছে, নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথে শ্রমিকদের ঐক্য অপরিহার্য।”
আরও পড়ুনঃ “আওয়ামী লীগ প্রশ্নে এক বিন্দু ছাড় নয়”—আশুলিয়ায় শ্রমিক সমাবেশে নুরুল হক নুর
আবুল হাশেম বক্কর স্মরণ করিয়ে দেন, “শহীদ জিয়া শ্রমিকদের উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।”
এরশাদ উল্লাহ বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে শ্রমিকদের আত্মদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এখনো তারা অবহেলিত।”
ইদ্রিছ মিয়া বলেন, “শ্রমিকদের স্বপ্ন পূরণে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় এলে শ্রমিকদের জন্য বাস্তবসম্মত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।”
সমাবেশে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি অসংখ্য শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা মে দিবসের সংগ্রামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।