
সোমবার (৫ মে) যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার দেশে ফেরার নির্ধারিত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট থেকে আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দুইজন কেবিন ক্রুকে। বিমানের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে জোরালো আলোচনা।
সূত্র জানায়, বিজি ২০২ নম্বর ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে রোববার (৪ মে) সন্ধ্যায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে থাকবেন পরিবারের সদস্য ও বিএনপির শীর্ষ নেতারাও। এই বিশেষ যাত্রাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
ফ্লাইট সার্ভিস বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার (২ মে) দুপুরে বিজি ২০২ ফ্লাইটের জন্য কেবিন ক্রু হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন চিফ পার্সার নিশি, ফ্লাইট পার্সার আল কুবরুন নাহার কসমিক, মো. কামরুল ইসলাম ও জুনিয়র পার্সার রিফাজ। তবে হঠাৎ করেই মধ্যরাতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সরিয়ে দেওয়া হয় কসমিক ও কামরুল ইসলামকে। তাদের পরিবর্তে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ফ্লাইট পার্সার ডিউক এবং ফ্লাইট স্টুয়ার্ডেস আনহারা মারজানকে।
বিমানের প্রশাসন বিভাগ এবং গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, সরিয়ে দেওয়া কেবিন ক্রুদের বিরুদ্ধে রয়েছে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতা এবং নিরাপত্তাজনিত শঙ্কার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিমানের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কেবিন ক্রু আল কুবরুন নাহার কসমিক নিয়মিতভাবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার ফ্লাইট পরিচালনা করতেন। তার বিরুদ্ধে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ, রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও দায়িত্ব পালনে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, চাকরি জীবনে তিনি ১৮ বার কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন এবং একাধিকবার গ্রাউন্ডেড হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ পাংশায় সাহিত্য উন্নয়ন পরিষদের মাসিক সভায় রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী পালনের সিদ্ধান্ত
অন্যদিকে জুনিয়র পার্সার মো. কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও রয়েছে সক্রিয়ভাবে সরকারি দলের নানা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অভিযোগ। প্রতিবছর ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দেওয়া, শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ আয়োজন এবং বিমানে শেখ রাসেল দিবস পালনের মতো কর্মকাণ্ডে তিনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন।
গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট তথ্য যাচাই করে নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা গেছে।