spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসল্যাপটপ চুরির পাঁচ মাসেও কার্যকর পদক্ষেপ নেই, নিরাপত্তাহীনতায় রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা

ল্যাপটপ চুরির পাঁচ মাসেও কার্যকর পদক্ষেপ নেই, নিরাপত্তাহীনতায় রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা

মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় তিনদিন নয়, পেরিয়ে গেছে পাঁচ মাস—তবুও কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং ‘প্রক্রিয়া চলছে’—এই অস্পষ্ট আশ্বাসের বৃত্তেই সীমাবদ্ধ থেকেছে প্রশাসনের ভূমিকা। পরপর দুটি চুরির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও ক্ষোভ চরমে উঠেছে।

সর্বশেষ চুরির ঘটনা ঘটে গত ৪ মে (রবিবার) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে, মুসলিম ছাত্রাবাসের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ভবনের (সি-ব্লক) ১০৬ নম্বর কক্ষে। মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. রায়হান সরকার ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার ল্যাপটপটি নেই। পরবর্তীতে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক মুখোশধারী ব্যক্তি তার রুমে ঢুকে ল্যাপটপ নিয়ে চলে যায়। ঘটনা জানার পরও কলেজ প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

শুধু এই ঘটনাই নয়, এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে একই ভবনের ২০৪ নম্বর রুম থেকে আবাসিক শিক্ষার্থী আবু রায়হানের ল্যাপটপ চুরি হয়। দীর্ঘ পাঁচ মাস পার হলেও সে ঘটনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি। প্রশাসনের এমন দায়সাড়া মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. যহুর আলী বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পুলিশের কাছে ডায়েরি করা হয়েছে, আমরা শুধু পরামর্শ দিচ্ছি।” তার এমন মন্তব্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও হতাশা দেখা দিয়েছে। তাদের প্রশ্ন—প্রশাসন কেন নিজ দায়িত্বে নিরাপত্তা জোরদার করছে না?

ছাত্রাবাসের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক আবু জাফর মো. মনিরুল ইসলাম ঘটনার দায় শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে বলেন, “আমরা চাইলে গেট বন্ধ রাখতে পারি, কিন্তু ছাত্ররা সেটা মানে না।” তবে তিনি জানান, চুরির পরপরই থানায় ডায়েরি করা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত করছে।

রাজশাহী কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান মাসুম বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ থাকার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ল্যাপটপ, মোবাইল, টাকা চুরি এখন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে, অথচ প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিয়েই পার পাচ্ছে।”

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের যারা ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইন ক্লাসে যুক্ত, তাদের জন্য ল্যাপটপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর তা চুরি যাওয়ার পর প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

আরও পড়ুনঃ ৫৮ বছরে পা রাখল সরকারি তিতুমীর কলেজ — উচ্চশিক্ষায় এক ধ্রুবতারা

রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ (আবির) বলেন, “এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো মাথাব্যথা নেই। আমরা অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করেছি, কোনো পদক্ষেপ নেননি। আগামীকাল পর্যন্ত সময় দিয়েছি, এরপর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।”

এদিকে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ জানিয়েছেন, “সিসিটিভি ফুটেজে মাস্ক পরিহিত একজনকে দেখা গেছে। তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।”

প্রশাসনের এমন উদাসীনতায় শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রয়োজন হলে তারা কঠোর আন্দোলনে নামতে প্রস্তুত। নিরাপত্তা না থাকলে পড়াশোনার পরিবেশও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে—এমনটাই তাদের আশঙ্কা।