
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুকন উদ্দিন বলেছেন, “যারা ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকারের চোখে চোখ রেখে রাজনীতি করেছে, খুন হয়েছে, গুম হয়েছে, নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? একদিনও তো আপনাদের কণ্ঠে শুনিনি ‘আমরা ছাত্র ইউনিয়ন করি, মৈত্রী করি, শিবির করি’ বলে হাসিনার টুটি চেপে ধরার ডাক দিতে।”
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকাল ৫টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে এসব মন্তব্য করেন তিনি। কর্মসূচির মূল দাবি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য’র হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নিরাপদ শিক্ষা অঙ্গনের নিশ্চয়তা।
রুকন উদ্দিন বলেন, “আমরা ভাবিনি একদিন আমাদের সাম্য হত্যার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচিতে নামতে হবে। আমরা এমন একটি দেশ চেয়েছিলাম যেখানে বৈষম্য থাকবে না, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থাকবে না। কিন্তু আজ দেখা যায়, ছাত্রদল বা সাধারণ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হলে, একটি মহল উল্টো প্রোপাগান্ডা ছড়ায়। তারা চাঁদাবাজির গল্প ফেঁদে মৃত ব্যক্তির সম্মানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রদল কখনো লাশ নিয়ে রাজনীতি করেনি। বরং আবু সাঈদের মৃত্যুতে প্রথম কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল ছাত্রদল, যদিও তিনি আমাদের সদস্য ছিলেন না। কিন্তু ওয়াসিম যিনি আমাদের কর্মী ছিলেন, তার নাম কেউ স্মরণ করে না—এটাই আমাদের প্রতি বৈষম্য। তবুও আমরা মেনে নিয়েছি। কারণ ছাত্রদল এমন একটি সংগঠন যা দেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লার সঙ্গে যুক্ত।”
বৈষম্য বিরোধীদের উদ্দেশে রুকন বলেন, “যারা আজ আমাদের অবদান অস্বীকার করছেন, তারা ভুলে গেছেন—যখন আপনারা হলে বসে থাকতেন, তখন আমরা মেইন গেটে দাঁড়িয়ে আপনাদের নিরাপত্তা দিতাম। আর আজ যখন হাসিনার সরকার বিদায় নিয়েছে, তখন আপনারাই নিজেদের হিরো বলে দাবি করছেন। অথচ রাজপথে আমরা ছিলাম, ব্যানার না থাকলে আপনাদের ডেকে এনেছি। কিন্তু আপনারা ভয় পেয়েছেন, আসেননি।”
আরও পড়ুনঃ ছাত্র ইউনিয়নকে নিয়ে ছাত্রদল নেতার মিথ্যাচারমূলক মন্তব্যের প্রতিবাদে বিবৃতি ইবির ছাত্র ইউনিয়নের
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সাম্য হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত না হলে এই আন্দোলন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পতনের আন্দোলনে রূপ নিতে পারে। আমরা সে প্রস্তুতি নিয়ে রাজপথে আছি।”
কর্মসূচি সঞ্চালনায় ছিলেন শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ। এসময় উপস্থিত ছিলেন শাখা আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক রুকনউদ্দীন, আনোয়ারুল ইসলাম, আহসান হাবীবসহ প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী।
ছাত্রদলের নেতারা দাবি করেন, রাজনৈতিক মতভেদ থাকতেই পারে, কিন্তু মৃত্যুর মতো ঘটনা নিয়ে প্রোপাগান্ডা চালানো অনৈতিক ও অমানবিক। ছাত্রদলের একমাত্র লক্ষ্য—অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা।