spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশে ‘কারবালা’ তৈরি করেছে: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশে ‘কারবালা’ তৈরি করেছে: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ ভারতের ফারাক্কা বাঁধকে বাংলাদেশের জন্য ‘কারবালার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, এই বাঁধের ফলে বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠী সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, নদ-নদী শুকিয়ে গেছে, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চের ৪৯তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত র‌্যালি শেষে রাজশাহী কলেজ অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

ফরিদা আখতার বলেন, “ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশের ছয় কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গড়াই নদীতে যেখানে ১৮টি পরিবার স্থায়ীভাবে বসবাস করছে, সেখানে নবগঙ্গা নদীতে মাছের প্রজাতি কমে ১১৮ থেকে মাত্র ৩৫টিতে নেমে এসেছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় মাছের বৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফারাক্কা বাঁধের কারণে এদেশে এক ভয়াবহ কারবালার দৃশ্য তৈরি হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ভারত আমাদের অধিকার হরণ করেছে। তারা ফারাক্কা বাঁধের মাধ্যমে আমাদের নদীগুলোকে শুকিয়ে মেরে ফেলেছে। এই নির্মম অবিচার আমরা কখনোই ক্ষমা করব না। এবার যদি নতুন চুক্তি হয়, সেখানে যদি পানি না পাই, তাহলে বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলব। দেশের স্বার্থে চুক্তির প্রতিটি ধারা বাস্তবায়নে চাপ সৃষ্টি করব।”

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ফারাক্কা বাঁধ কোনো উন্নয়ন প্রকল্প নয় বরং এটি একটি মরণ বাঁধ, যা বাংলাদেশের ভূ-অর্থনীতিকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ১৮ কোটি মানুষের একটি দেশ কখনো দুর্বল হতে পারে না, তাই এখনই জাতীয় জাগরণ ঘটাতে হবে।

তারা বলেন, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন এক নিঃস্বার্থ নেতা, যিনি ফারাক্কা লং মার্চের মধ্য দিয়ে দেশের জনগণ ও ভারতের আগ্রাসনের মধ্যকার পার্থক্য তুলে ধরেছিলেন। ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের পক্ষে মত দিয়ে বক্তারা বলেন, “আমরা ভারতকে ভালো প্রতিবেশী হিসেবে দেখতে চাই, কিন্তু কোনো আপস নয়, অধিকার আদায়ে হবে প্রতিরোধ।”

আরও পড়ুনঃ সমকামিতায় অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী বরখাস্তের দাবিতে ফের উত্তাল ইবি

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীব, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ, গবেষক ও লেখক বেনজিন খান, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. যুহুর আলী এবং রাজশাহী বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম।

এছাড়া অনুষ্ঠানে কবি, সাহিত্যিক, নদী গবেষক, চিকিৎসক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারী মহাসচিব ও গবেষক ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন এবং কবি ও গবেষক ড. ফজলুল হক তুহীন।