spot_img

― Advertisement ―

spot_img

জাকসু নির্বাচন বর্জন, পুনঃনির্বাচনের দাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। পাশাপাশি পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে...
প্রচ্ছদজাতীয়সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, মঙ্গলবার মাঠে নামছে ঐক্য ফোরাম

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, মঙ্গলবার মাঠে নামছে ঐক্য ফোরাম

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির পর থেকে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে দেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে। তাদের অভিযোগ, এই অধ্যাদেশ একতরফাভাবে জারি করে ফ্যাসিবাদী কায়দায় একটি ‘কালো ও জংলি আইন’ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা মৌলিক অধিকার ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।

রোববার (২৫ মে) রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর আগে ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর থেকেই এর বিরুদ্ধে সচিবালয়সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। সোমবার সকাল থেকেই সচিবালয়ের ছয় নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় নজিরবিহীন জমায়েত ও বিক্ষোভে অংশ নেন শত শত সরকারি কর্মচারী।

নতুন অধ্যাদেশে চারটি অপরাধ—শৃঙ্খলা ভঙ্গ, কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, কর্তব্য পালনে অন্যকে বাধা দেওয়া এবং উসকানি দেওয়ার জন্য চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্তসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। তবে আপিলের পথ সংকুচিত করা হয়েছে, যা অধিকাংশ কর্মচারীর কাছে উদ্বেগজনক বলে বিবেচিত হয়েছে।

প্রশাসন বিশ্লেষক ও সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান এ বিষয়ে বলেন, “এই অধ্যাদেশ সংবিধানবিরোধী, মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনকারী এবং প্রকৃত অর্থে একটি জংলি আইন। সরকারি কর্মচারীদের শাস্তির জন্য যথেষ্ট আইন আছে। তবুও এমন একতরফা ব্যবস্থা কেন নেওয়া হলো তা বোধগম্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, “এটি সরাসরি ১৯৭৯ সালের সামরিক আইনের অনুরূপ। যেটি ২০১৮ সালে ‘সরকারি চাকরি আইন’ হিসেবে পুনরায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। এই কালাকানুন বাতিল না করলে ১৮ লাখ সরকারি কর্মচারী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সদস্য সচিব কাজী মেরাজ হোসেন এই অধ্যাদেশকে “ন্যায় বিচারের পরিপন্থি ও অমানবিক” আখ্যা দিয়ে বলেন, “এমন আইন সভ্য কোনো রাষ্ট্রে চলতে পারে না। সাজা দিলেও কোথাও আপিল করা যাবে না—এটা সংবিধানের কোথাও নেই। এটি মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের নামান্তর।”

আরও পড়ুনঃ ভালুকায় ঈদের ছুটির মধ্যেও ৫, ১১ ও ১২ জুন সীমিত পরিসরে ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে

এই পরিস্থিতিতে সকল স্তরের কর্মচারীদের সংগঠনগুলো ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’ নামে একত্র হয়ে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১০টায় সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা বাদামতলায় সমবেত হবেন। সেখানে অনুষ্ঠিত হবে প্রতিবাদ সমাবেশ।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর বলেন, “এই কালো আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আইন বাতিল হলেই আমরা কর্মসূচি স্থগিত করব।”

সরকারি চাকরি সংশোধনী অধ্যাদেশ নিয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না দিলেও মাঠে প্রশাসনের গভীর অস্থিরতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, সেটি নির্ভর করছে সরকার কতটা দ্রুত ও কার্যকরভাবে আলোচনায় বসে এই সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নেয় তার ওপর।