
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ৩ মাস মেয়াদী আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চার বছর পার করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদল। এতে দলের পদ প্রত্যাশীসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বয়স নিয়ে বিভিন্ন মহলে ‘আদুভাই’ নামেও সমালোচিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন নেতৃত্বের পরিবর্তন না হওয়ায় সংগঠন থেকে ত্যাগী কর্মীরা সরে যাচ্ছেন। এতে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে আগ্রহ হারাচ্ছেন তরুণ কর্মীরা।
জানা যায়, ২০২১ সালের ১৬ জুনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। এতে লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০০৭-০৮ বর্ষের শিক্ষার্থী শাহেদ আহম্মেদকে আহ্বায়ক ও ২০১১-১২ বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রুমী মিথুনকে সদস্যসচিব করে ৩১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেন তৎকালীন ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল। ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৪ অনুযায়ী আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ ৩ মাস হলেও চার বছর পার হয়েছে কমিটির।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটির অধিকাংশ সদস্যই এখন নিষ্ক্রিয়, বিবাহিত ও চাকরিজীবী। দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় এসব কর্মীদের দলীয় কোনো কার্যক্রমে নেই। এর মধ্যে কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহানুর হোসেন (চাকরিজীবী), ওমর শরীফ (চাকরিজীবী), যুগ্ম আহ্বায়ক আবু দাউদ (বিবাহিত ও চাকরিজীবী), সবুজ হোসেন (চাকরিজীবী), নৌশিন তাবাসসুম, সদস্য মাহমুদুল হাসান মৃদুল (বিবাহিত ও বিদেশে থাকেন), লিমন হোসাইন, মেহেদী হাসান হিরা (বিদেশ)। কমিটিতে আরও নিষ্ক্রিয় রয়েছেন, সদস্য সোলায়মান চৌধুরী, মনিরুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, সদস্য জিতু আহসান, ওসমান আলী, সাব্বির হোসেন, রাফসান জনি শাওন, সানজিদা ইসলাম ও রুনা খাতুনসহ কেউ কেউ ১/২ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় আছেন।
ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী রোকনুজ্জামান বলেন, ‘আমি ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে এখন পর্যন্ত ইবি ছাত্রদলের রাজনীতি করছি। আমিসহ আরও অনেকেই আছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করেও কোনো পদ পাননি।’
ইবি শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘আমার বিশ্বাস কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সব বিষয়ে অবগত আছে এবং দ্রুতই দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে থাকা ত্যাগী ও নির্যাতিত কর্মীদের মূল্যায়ন করবেন।
আরও পড়ুনঃ যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আজিজুলের শাস্তি চায় ইবি শিক্ষার্থীরা
কমিটির আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদ বলেন, দীর্ঘদিন আমরা দু:শাসনের মধ্যে ছিলাম। মামলা, হামলা, গুমের মধ্যে ছিলাম। কমিটি গঠন কেন্দ্রের ব্যাপার। স্বাভাবিক ভাবেই নতুন কমিটি গঠন করতে গেলে তো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। যোগ্য কর্মীদের গুছিয়ে আনতে হবে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে আসবে।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, রাজনৈতিক কিছু বিষয়ের জন্য, বিশেষ করে জামাত-শিবিরের গুপ্ত অপরাজনীতি চেপে বসার কারণে ক্যাম্পাসে অভিজ্ঞদের প্রয়োজন ছিল। তাই আমরা এতদিন আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। যারা দীর্ঘদিন ধরে ইবি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং ত্যাগী তাদেরকে আমরা কমিটির আওতায় এনে শিগগিরই কমিটি দিব।