
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃসেশন ফুটবল ম্যাচ চলাকালে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও ছাত্র ইউনিয়ন। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র ও জুনিয়রদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন সাংবাদিক মারধরের শিকার হন। হামলাকারীরা তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারে। হামলার পর সাংবাদিকরা প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রোববার সকাল পর্যন্ত) ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন ফেরত পাওয়া যায়নি।
আহত সাংবাদিকরা হলেন—আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ বিল্লাহ (দৈনিক আমাদের বার্তা), রবিউল আলম (দৈনিক আজকালের খবর) এবং সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নূর-এ-আলম (বার্তা২৪)।
এই ঘটনায় ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহ ভিডিও ধারণ করতে গেলে শিক্ষার্থী আফসানা পারভিন টিনা তার মোবাইল কেড়ে নেন এবং অন্যরা দলবদ্ধভাবে হামলা চালায়। হামলাকারীরা পরে ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে একজন নারী শিক্ষার্থীকে ভিকটিম বানিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচার চালায়। এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস সংস্কৃতির উপর সরাসরি আঘাত বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
ছাত্রদলের বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদকর্মীরা সবসময় পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করে আসছে। সাংবাদিকদের উপর এ ধরনের বর্বর হামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি চরম অবমাননা। অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আরও পড়ুনঃ মারামারির সংবাদ সংগ্রহে ফোন কেড়ে দফায় দফায় সাংবাদিকদের মারধর; অভিযোগপত্র দায়ের
ছাত্রশিবিরের বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাধা প্রদান এবং মারধর কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীন সাংবাদিকতা অপরিহার্য। অবিলম্বে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্তরা অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন নাহিদ হাসান, সাব্বির, আফসানা পারভিন টিনা, মিনহাজ, সৌরভ দত্ত, রিয়াজ মোর্শেদ, সৌরভ সোহাগ, পান্না, অজিল, সাইফুল, রাকিব, মশিউর রহমান রিয়ন ও হৃদয়সহ আরও ২০-২৫ জন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো ঘটনার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিকসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।