
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। একইসঙ্গে তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনের দাবি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হলসংলগ্ন পুকুর থেকে পুলিশের উপস্থিতিতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে রাত ৮টার দিকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সুতাপ রায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক জানান, পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় শোক জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (রুটিন দায়িত্বে) অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক এক বিবৃতিতে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ইবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “সাজিদ একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সহ-সমন্বয়ক পংকজ রায় স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, “সাজিদ ছিলেন জুলাই আন্দোলনের একজন সাহসী সৈনিক। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়িত্বশীল আচরণের প্রত্যাশা করছি।”
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. মাহমুদুল হাসান ও সেক্রেটারি ইউসুফ আলী বলেন, “সাজিদ ভালো সাঁতার জানতেন। তাই কেবল সাঁতার কাটতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে—এমন ব্যাখ্যা আমাদের মধ্যে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। আমরা ঘটনার গভীরে তদন্ত দাবি করছি।”
আরও পড়ুনঃ জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ‘ফ্রি ইন্টারনেট ডে’, ১ জিবি ফ্রি ডাটা
ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক নূর আলম বলেন, “সাজিদের মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করেছে। সে একজন হাস্যোজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত তরুণ ছিল। এ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি প্রশাসনের প্রতি দৃঢ়ভাবে তদন্তের দাবি জানাই।”
শাখা খেলাফত ছাত্র মজলিসের সভাপতি সাদেক আহমদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক জুনায়েদ খান যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “সাজিদের আকস্মিক চলে যাওয়া আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা শোকাহত পরিবারের পাশে আছি এবং মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাই।”
উল্লেখ্য, সাজিদ আব্দুল্লাহ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার আহসান হাবিবুল্লাহর ছেলে। তাঁর সহপাঠী ও বন্ধুমহলের অনেকে তাকে একজন শান্ত স্বভাবের, নিরহঙ্কার ও সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে জানতেন। এখন তার এই রহস্যময় মৃত্যুর ঘটনার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও দায় নিরূপণের দাবিই শিক্ষাঙ্গনে উচ্চকণ্ঠ হয়ে উঠেছে।