
মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের মূল নায়ক দেশনায়ক তারেক রহমান এবং সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ যিনি করেছেন, তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এই আন্দোলনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনসমূহ।”
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়স্থ জিইসি কনভেনশন সেন্টারে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখা আয়োজিত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পেশাজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, “১৬ বছরের দীর্ঘ আন্দোলনে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী নিপীড়নের শিকার হয়েছেন—ব্যবসা ধ্বংস, চাকরি হারানো, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ নানা ত্যাগ তাঁরা স্বীকার করেছেন। আজ সেই আত্মত্যাগ ভুলে যাওয়া অন্যায়।”
তিনি জানান, “আগামীতে বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে। এটি কোনো রাজনৈতিক স্লোগান নয়, বরং সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে দেশের আইটি, কৃষি, শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে বাস্তবায়নযোগ্য নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।”
তারেক রহমানকে ‘আন্দোলনের নায়ক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “এত বড় আন্দোলনে তিনিই জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পেরেছেন। আর আন্দোলনের আত্মত্যাগের প্রতীক হলেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া।”
সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “৪৭ না হলে ৫২, ৫২ না হলে ৭১, আর ৭১ না হলে ৭৫ হতো না—ঠিক তেমনি ১৬ বছরের দীর্ঘ লড়াই না হলে জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন সফল হতো না। এই আন্দোলনের পেছনে রয়েছে হাজারো শহিদের আত্মত্যাগ, বিশেষ করে ওয়াসিম ও আবু সাইদের আত্মদান মানুষের হৃদয়ে চিরজাগরুক থাকবে।”
আরও পড়ুনঃ প্রথমবারের মতো ইবিতে আইন বিভাগের আন্তঃসেশন মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “এই ৩৬ দিনের আন্দোলন বিচ্ছিন্ন নয়, এটি দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলনের ফসল। সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত, গুম, খুন, মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরাই। আমরা এই আন্দোলনের কৃতিত্ব এককভাবে দাবি করি না, এটি জনগণের গণবিপ্লব।”
তিনি বলেন, “আমার বাসায় এবং ভাইয়ের বাসায় আগুন দেওয়া হয়েছিল। আমার মা পর্যন্ত আগুনে অবরুদ্ধ ছিলেন। এসব ঘটনার বিচার হয়নি।”
সভাপতির বক্তব্যে জাহিদুল করিম কচি বলেন, “ফ্যাসিবাদ শুধু সরকারে নয়, সাংবাদিকতা ও বিভিন্ন পেশায়ও তা ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন করে আবার চক্রান্ত শুরু হয়েছে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন: ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, ইঞ্জিনিয়ার জানে আলম সেলিম, শামসুল হক হায়দরী, মুস্তাফা নঈম, এড. বদরুল আনোয়ার, সালেহ নোমান, ডা. আশরাফুল কবির ভূঁইয়া, এড. আবদুল সাত্তার, এড. তারিক আহমেদ, এড. মুফিজুল হক ভূঁইয়া, ডা. ঈসা চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মেজবাউল আলম, আবদুল হক, মেহরাব হোসেন খান, মো. ওসমান ও সিদ্দিক আল মামুন।
আলোচনায় বক্তারা ‘জুলাই বিপ্লবের’ চেতনায় জাতীয় ঐক্য, রাষ্ট্র সংস্কার এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপির ৩১ দফার রূপরেখাকে এগিয়ে নিতে পেশাজীবীদের সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।