
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানাধীন ঝাউতলা এলাকায় মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদমূলক স্ট্যাটাস দেওয়ায় হামলার শিকার হয়েছেন মোহাম্মদ রুবেল নামে এক সাংবাদিক। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঝাউতলা বাজার রোডে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত রুবেল দৈনিক একুশে সংবাদ–এর বিশেষ প্রতিনিধি এবং চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিআরএ)–এর সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনার পর তিনি খুলশী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
ভুক্তভোগী রুবেল জানান, মঙ্গলবার সকালে তিনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন, যেখানে ঝাউতলা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সচেতনতা প্রকাশ করেন। স্ট্যাটাসে অভিযুক্ত হিসেবে হোসেন ও তার ভাই জসিমের নাম উঠে আসে। এ ঘটনার জেরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে রুবেল যখন ঝাউতলা বাজার রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন চাঁদাবাজ হোসেন রাস্তা আটকে তাকে পাশের অন্ধকার গলিতে জোরপূর্বক নিয়ে যান।
পরে হোসেন ও তার ভাই, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জসিম, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং রুবেলের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। হামলার সময় তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুরেরও চেষ্টা করা হয়। একপর্যায়ে চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পালানোর সময় তারা রুবেলকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলেন, “এই যাত্রায় বেঁচে গেলি, আবার পেলেই ট্রাক দিয়ে চাপা দিয়ে এক্সিডেন্ট সাজিয়ে দেবো।”
আরও পড়ুনঃ আশুলিয়ায় শহীদ পরিবারের সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ, মির্জা ফখরুলের ক্ষোভ
এ বিষয়ে খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আফতাব হোসেন বলেন, “অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে একজন সাংবাদিকের ওপর প্রকাশ্যে এমন বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সাংবাদিক কমিউনিটি, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন। এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনগুলো বলেন, “এই হামলা শুধু একজন সাংবাদিকের ওপর নয়, এটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের ওপর হামলা। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
তারা আরও বলেন, “বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকরা হামলা, হুমকি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এসব বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় সারা দেশে সাংবাদিক সমাজকে নিয়ে একযোগে প্রতিবাদ ও আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”