spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসজুলাই স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে ছাত্রশিবির নেতার বক্তব্য ঘিরে রাজশাহী কলেজে উত্তেজনা

জুলাই স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে ছাত্রশিবির নেতার বক্তব্য ঘিরে রাজশাহী কলেজে উত্তেজনা

মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধিঃ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজশাহী কলেজে আয়োজিত স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছাত্রশিবির নেতার বক্তব্য ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে উত্তেজনা।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টায় কলেজের প্রশাসন ভবনের সামনে আয়োজিত ‘জুলাই যোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ ও ডকুমেন্টস প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠানে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

অনুষ্ঠানে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসেনের বক্তব্যে রাজনৈতিক বার্তা ও স্লোগান প্রদানের অভিযোগ এনে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ জানায় কলেজ শাখা ছাত্রদল। তাদের অভিযোগ, এই বক্তব্য অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করেছে এবং একে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করেছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. ইব্রাহিম আলীসহ কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।

রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন, “এই অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাজনৈতিক বিষয় না রাখার বিষয়ে প্রিন্সিপাল স্যার আগেভাগেই আমাদের অবহিত করেছিলেন। আমরা সেই নির্দেশনা অনুসরণ করে কেবলমাত্র জুলাই আন্দোলনের ইতিহাস ও আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে একটি সংগঠন সরাসরি তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম প্রচার করেছে, এমনকি এলইডি ডিসপ্লেতে তাদের সংগঠনের প্রচারণামূলক কনটেন্টও দেখিয়েছে। বিষয়টি শুধু বিতর্কিত নয়, অনুষ্ঠানকেই রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত করার চেষ্টা।”

আরও পড়ুনঃ সামরিক বাহিনীর মধ্যে ভারতীয় দালাল ও ‘র’ এর অনুপ্রবেশ ঘটেছেঃ মাহমুদুর রহমান

তিনি আরও বলেন, “একই অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের জন্য এক নিয়ম আর অন্য সংগঠনের জন্য ভিন্ন আচরণ—এটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ন্যায়সংগত নয়। শিক্ষাঙ্গনে নিরপেক্ষতা ও সমান সুযোগ নিশ্চিত না হলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য।”

অন্যদিকে রাজশাহী কলেজ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমি সাধারণভাবেই বক্তব্য দিয়েছিলাম। পেছনের প্রজেক্টরে আমাদের সংগঠনের কার্যক্রম প্রচার হচ্ছিল কি না, তা আমার জানা ছিল না। বক্তব্য শেষে আমি শুধু ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দিয়েছি, এটিও হয়তো কারও খারাপ লাগতে পারে। তবে এটি ছিল পুরোপুরি ধর্মীয় চেতনা থেকে উৎসারিত, কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আহ্বান নয়।”

প্রতিবাদ ও উত্তেজনার মুখে কলেজ প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উভয়পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানায়। অনুষ্ঠানের আয়োজক পক্ষের একজন শিক্ষক বলেন, “এ ধরনের দিবস ও আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ইতিহাস চর্চা ও স্মৃতিচারণ—না যে কারো রাজনৈতিক প্রচার। ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।”

রাজশাহী কলেজের ঐতিহ্যবাহী প্রেক্ষাপটে এমন একটি অনুষ্ঠানে বিতর্কিত বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়া কলেজ শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, রাজনৈতিক বিভাজনের পরিবর্তে ইতিহাস ও আত্মত্যাগের দিনগুলোতে সম্মিলিত শ্রদ্ধা ও ঐক্যই হওয়া উচিত মূল বার্তা।