spot_img

― Advertisement ―

spot_img

দলের দুঃসময়ের নেতাকর্মীরা এলাকায় মিজান-রায়হান আতঙ্কে

মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদেরের ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত...
প্রচ্ছদসারা বাংলাসাংবাদিকরা দলের নয়, জনগণের হোকঃ আমীর খসরু

সাংবাদিকরা দলের নয়, জনগণের হোকঃ আমীর খসরু

মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ “সাংবাদিকরা বিএনপির নয়, জনগণের হোক—সাংবাদিকতা হোক মানুষের পক্ষে।” চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক-ছাত্র-জনতার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে সপ্তাহব্যাপী জুলাই অনুষ্ঠানমালার সমাপনী দিনে ‘ক্যামেরায় জুলাই বিপ্লব’ শীর্ষক প্রদর্শনীর পর এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব। সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, যৌথ সঞ্চালনায় ছিলেন বৈশাখী টিভির ব্যুরো চিফ গোলাম মওলা মুরাদ এবং মিয়া মোহাম্মদ আরিফ।

আমীর খসরু বলেন, “আপনারা বিএনপির সাংবাদিক হবেন না, এমনকি দলেরও না। হোন দেশের সাংবাদিক, মানুষের সাংবাদিক। স্বৈরাচারের পক্ষে দাঁড়ানো সংবাদকর্মী সাংবাদিকতার সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। তারা হয়ে যায় দলীয় কর্মী।” তিনি বলেন, “আমরা ১৫ বছর ধরে সাংবাদিকতার বাস্তব চিত্র দেখেছি—কারা দেশ বিক্রি করে লিখেছে, কারা ফ্যাসিস্টের দোসর হয়ে সুবিধা ভোগ করেছে। শেখ হাসিনার সময়ও সাংবাদিকতার নামে শাসকগোষ্ঠীর প্রচারণা হয়েছে।”

তিনি শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া ও জেলে থাকা অবস্থার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “আমি গত বছর এই দিনে জেলে ছিলাম। তখন সেনাপ্রধানের ভাষণের মাধ্যমে জানতে পারি—শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন। সেই সময় জেলের মধ্যে হঠাৎ ‘বোমা ফাটার’ মতো প্রতিক্রিয়া হয়, বন্দিরা একসাথে চিৎকার করে ওঠে।”

তিনি বলেন, “জেল ব্রেকের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমি বন্দিদের বলেছিলাম, আমি তোমাদের ছাড়া বের হবো না। সবাই থেমে যায়। ইতিহাসে খারাপ নজির এড়াতে চাইতাম। সেই সময় আমি যেন জেলের মালিক বনে গিয়েছিলাম, কর্মকর্তারাও আমার পরামর্শ চাইছিল।”

আমীর খসরু বলেন, “বাংলাদেশের গণতন্ত্র, অর্থনীতি, মানুষের অধিকার—এই সবই নতুন সাংবাদিকতার আলোচ্য হওয়া উচিত। আমরা কৃতিত্বের জন্য আন্দোলন করিনি। আমরা চাই না কেউ বিভক্ত হোক। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারই আমাদের এক নম্বর শত্রু, তাকে প্রতিহত করতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে।”

তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনার পতনের পর দেশে ব্যাপক মানসিক পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তন যদি রাজনৈতিকভাবে ধারণ করা না যায়, ভবিষ্যতে রাজনীতির কোনো স্থান থাকবে না। নতুন বাংলাদেশের জন্য আমাদের নেতৃত্বে তারেক রহমান জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করে যাবেন।”

আরও পড়ুনঃ জুলাই স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে ছাত্রশিবির নেতার বক্তব্য ঘিরে রাজশাহী কলেজে উত্তেজনা

বিশেষ অতিথি হিসেবে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, “বর্তমান রাষ্ট্র কাঠামোতে জনগণের স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথনির্দেশনা।”

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, “বঙ্গবন্ধুর কন্যা খুনি শেখ হাসিনা জনগণের ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিলেন। জনগণই রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা ও মালিকানা ফিরে এনেছে। তার শাসনের ভয়েই পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন তিনি ও তার দোসররা।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন: ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহকারী মহাসচিব মুস্তাফা নঈম, সিএমইউজের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, সাংবাদিক কামরুল হুদা, হাসান মুকুল, ওয়াহিদ জামান, মোহাম্মদ আলী, জালাল উদ্দীন রুমি, জাহাঙ্গীর আলম, জোবায়ের চৌধুরী, ইভেন মীর, নুর হোসেন মামুন প্রমুখ।

এছাড়া বক্তব্য দেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মনোয়ারা বেগম মনি, ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিদোয়ান সিদ্দিকী ও সিয়াম এলাহী।

অনুষ্ঠানে “জুলাই বিপ্লব” বিষয়ক সংগীত পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা। প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে ছবি ও তথ্যনির্ভর প্রদর্শনীটি ছিল দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।