
নিজস্ব প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) গঠনতন্ত্রে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। গঠনতন্ত্র থেকে চারটি সহ-সম্পাদকের পদ বাদ দিয়ে নতুন চারটি মূল পদ যুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে হল সংসদ থেকেও সকল সহ-সম্পাদকের পদ বাতিল করা হয়েছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চাকসু গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন।
তিনি ঢাকামেইলকে জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রথম বৈঠকের পর ১১ সেপ্টেম্বর প্রণয়ন কমিটি সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়। সংশোধিত গঠনতন্ত্র উপাচার্যের অনুমোদনক্রমে শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
ড. কামাল বলেন, “নতুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে চার সহ-সম্পাদকের পদ বাদ দিয়ে চারটি মূল পদ রাখা হয়েছে। যেমন সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ও সহ-সম্পাদকের পরিবর্তে দুটি আলাদা পদ করা হয়েছে—‘সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক’ এবং ‘আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক’।
এছাড়া অন্য সহ-সম্পাদক পদগুলোর পরিবর্তে যুক্ত হয়েছে ‘পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক’, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক’ এবং ‘ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক’। তবে মোট পদ সংখ্যা অপরিবর্তিত থেকে ২৮টি রাখা হয়েছে।”
সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চাকসুর পদসমূহ:
সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক, সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক, সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক, গবেষণা ও উদ্ভাবন সম্পাদক, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক, ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক (নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত), স্বাস্থ্য সম্পাদক, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক এবং ৫ জন নির্বাহী সদস্য।
আরও পড়ুনঃ আবিদের উক্তিকে ব্যঙ্গ’র ইস্যুতে ক্ষমা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন ইবির শিবির কর্মীদের
সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হল সংসদের পদসমূহ:
সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, খেলাধুলা সম্পাদক, সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক, সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান, গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদক, রিডিংরুম, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি সম্পাদক, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক এবং ৫ জন নির্বাহী সদস্য।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) চাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এতে অন্তর্ভুক্ত আছেন ২৫ হাজার ৮৬৬ জন শিক্ষার্থী। তফসিল অনুযায়ী ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হবে, জমা নেওয়া হবে ১৫ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর, প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে ২১ সেপ্টেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোট শেষে তাৎক্ষণিক গণনা শুরু হবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। ১৯৬৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথম নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ৩৫ বছর ধরে তা বন্ধ রয়েছে।