spot_img

― Advertisement ―

spot_img

সীতাকুন্ডে হামলা-লুটপাট, ইয়াছিন বাহিনীর ভয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ব্যবসায়ী রাজু

মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে পাহাড়খেকো ইয়াছিন বাহিনীর দৌরাত্ম্যে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান রাজু কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলা,...
প্রচ্ছদসারা বাংলাপ্রবীণদের যত্নে নবীনদের এগিয়ে আসতে হবে: মেয়র শাহাদাত

প্রবীণদের যত্নে নবীনদের এগিয়ে আসতে হবে: মেয়র শাহাদাত

মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, জেরিয়াট্রিক কেয়ার তথা প্রবীণজনের সেবাকে পরিবার থেকে শুরু করে প্রযুক্তিনির্ভর অনলাইন সহায়তায় সম্প্রসারণ করতে হবে। তিনি বলেন, “প্রবীণদের যত্ন কীভাবে নিতে হয় এবং কীভাবে সেটিকে অনলাইনে এনে ‘নবীনের হাতে প্রবীণের নিরাপদ বার্ধক্য’—এই ধারণাটিকে প্রতিষ্ঠা করা যায়, সেটিই সময়ের দাবি।”

শনিবার চট্টগ্রামে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে প্রবীণদের যত্ন’ (“Geriatric Care in Bangladesh: An Overview”) শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন। এসময় তিনি অনলাইনে একজন বৃদ্ধার সাথে মুঠোফোনে কাউন্সেলিং করার মাধ্যমে প্রবীণদের জন্য অনলাইন কাউন্সেলিং সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেরিয়াট্রিক কেয়ার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. কাজী মো. ইসরাফিল। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ভিসি এস. এম. নসরুল কদির, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরী, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটের হেড ডা. মনোজ কুমার বড়ুয়া, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের সভাপতি সৈয়দ মো. মোরশেদ হোসেন এবং মা ও শিশু হাসপাতালের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য ডা. এস. এম. সারোয়ার আলম।

মেয়র বলেন, প্রবীণদের যত্নের শুরু পরিবার থেকে। তিনি উল্লেখ করেন, “প্রথমে নিজেকে প্রশ্ন করুন—আপনার মা-বাবা আপনার কাছে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন কি না। প্রবীণদের ‘স্বাধীনতা’ ও ‘সম্মান’ নিশ্চিত করতে পারলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে বড় পরিবর্তন আসে।” তিনি পারিবারিক পরিবেশে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, কথা শোনা, সময় দেওয়া ও ছোট ছোট সদাচরণের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উদাহরণ টেনে মেয়র বলেন, “একটি হাসিমুখ, সালাম বা কুশল জিজ্ঞাসা—রাস্তায় একজন বৃদ্ধ রিকশাচালকের মনেও যে কত আনন্দ দেয়, আমরা তা প্রায়ই ভুলে যাই। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আবেগজনিত চাহিদা বেড়ে যায়; সেক্ষেত্রে ধৈর্য ও সহমর্মিতাই সবচেয়ে বড় ওষুধ।”

ডা. শাহাদাত প্রবীণদের প্রচলিত শারীরিক সমস্যার মধ্যে আর্থ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিসজনিত হাড় ভঙ্গুরতা ও ডিমেনশিয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, “সাপ্লিমেন্টের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম—বিশেষ করে জয়েন্ট ও বড় পেশির ব্যায়ামের মাধ্যমে শক্তি বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। অনেকের ক্ষেত্রে ‘প্যাসিভ এক্সারসাইজ’ শেখাতে হবে; এটি অনলাইন ট্রেনিংয়ের মাধ্যমেও দেওয়া সম্ভব।”

আরও পড়ুনঃ চার সহ-সম্পাদকের পদ বাদ, নতুন চারটি মূল পদ যুক্ত হলো চাকসুর গঠনতন্ত্রে

ডিমেনশিয়া রোগীদের প্রতি ধৈর্যশীল আচরণের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “বারবার একই কথা বলা বা ওষুধ ভুলে যাওয়া—এসব আচরণ রোগের লক্ষণ। যত্নশীল প্রতিক্রিয়া ও মনোসামাজিক সহায়তা এখানে অত্যন্ত প্রয়োজন।”

প্রযুক্তিনির্ভর সেবার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা সবাই ব্যস্ত; তবু অনলাইন সেশনের মাধ্যমে প্রবীণরা কথা বলার প্ল্যাটফর্ম পেলে একাকিত্ব কমে, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।”

প্রবীণবান্ধব নগর গড়ে তুলতে চসিকের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে মেয়র জানান, “চট্টগ্রামে একটি আধুনিক মানের ‘ওল্ড এজ হোম’ নির্মাণে কাজ করার পরিকল্পনা নিয়েছি যেখানে চিকিৎসা, কাউন্সেলিং, বিনোদন, পুনর্বাসন ও অনলাইন সাপোর্ট—সবকিছুর সমন্বিত ব্যবস্থা থাকবে, ইনশাআল্লাহ।”

পরিবারকে প্রবীণবান্ধব করে তোলার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, “মা-বাবা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেন—এ দায় শুধু সামাজিক নয়, নৈতিকও। আমাদের আচরণ—সম্মান, স্বাধীনতা দেওয়া ও পাশাপাশি থাকা—তাঁদের বার্ধক্যকে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ করে।”