spot_img

― Advertisement ―

spot_img

মাভাবিপ্রবিতে অচলাবস্থাঃ রেজিস্ট্রার বদল, নবনিযুক্ত কর্মকর্তাকে ঘিরে বিতর্ক

মো: আলিফ হোসাইন, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দুই দফা দাবিতে...
প্রচ্ছদশিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনক্যাম্পাসমাভাবিপ্রবিতে অচলাবস্থাঃ রেজিস্ট্রার বদল, নবনিযুক্ত কর্মকর্তাকে ঘিরে বিতর্ক

মাভাবিপ্রবিতে অচলাবস্থাঃ রেজিস্ট্রার বদল, নবনিযুক্ত কর্মকর্তাকে ঘিরে বিতর্ক

মো: আলিফ হোসাইন, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দুই দফা দাবিতে একাংশ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রেজিস্ট্রার অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে অপর একদল শিক্ষার্থী তালা ভেঙে দিলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ দেখা দেয়।

আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৎকালীন রেজিস্ট্রার ড. মো. তৌহিদুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ ওয়াহিদকে অস্থায়ীভাবে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব প্রদান করেছে। তবে এই নিয়োগকে ঘিরেই নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থী তার মানসিক স্বাস্থ্য ও অতীত আচরণ নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে ছিল—জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বিরোধিতাকারী শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বিচারের জন্য কমিটি গঠন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (মাকসু) গঠনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা। তাদের অভিযোগ, একাধিকবার আবেদন ও আলটিমেটাম দেওয়ার পরও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ কারণে ক্ষোভ থেকে রেজিস্ট্রার অফিসে তালা দেওয়া হয়। ফলে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

তবে দুপুরে অপর একদল শিক্ষার্থী তালা ভেঙে প্রশাসনিক কার্যক্রম সচলের দাবি তোলে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠন MBSTU Family-এর ফেসবুক গ্রুপে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে—২৯৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৯ শতাংশই জানিয়েছেন, তারা আগে থেকে এই কর্মসূচি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। ১৯ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন, “যৌক্তিক দাবি হলেও আমাদের ম্যান্ডেট নেওয়া হয়নি।” আর মাত্র ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী কর্মসূচিকে “সম্পূর্ণ সমর্থনযোগ্য” বলেছেন।

আরও পড়ুনঃ জালেমকে আর বাংলাদেশে দেখতে চাই না: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী কাশিফ আহমেদ বলেন, “তালা মারা কি গণতান্ত্রিক রাজনীতি? সুষ্ঠুভাবে আলোচনা না করে এভাবে পদক্ষেপ নিলে বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা থেকেই যায়।”

এদিকে, নতুন রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ড. সাজ্জাদ ওয়াহিদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮–২০০৯ ব্যাচের এক সাবেক শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি দাবি করেছেন, ড. সাজ্জাদ ওয়াহিদ অতীতে বহু শিক্ষার্থীকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, নিপীড়িত ও ট্রমাটাইজড করেছেন। তার আশোভন আচরণের কারণে ইতোপূর্বে তাকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল।

প্রাক্তন শিক্ষার্থী আরও মন্তব্য করেন, “তিনি নিজেই মানসিকভাবে অসুস্থ। এমন অবস্থায় তাকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে বহাল রাখলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। স্থায়ী নিয়োগের আগে তার মানসিক স্বাস্থ্যের নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি।” সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি তথ্য-প্রমাণ যাচাইয়ের আহ্বান জানান।

শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক দাবি আদায়ের আন্দোলন এবং নবনিযুক্ত রেজিস্ট্রারকে ঘিরে ওঠা গুরুতর অভিযোগ—এই দুই ইস্যুতে বর্তমানে মাভাবিপ্রবির ক্যাম্পাসজুড়ে গভীর উদ্বেগ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।