
নিউজ ডেস্ক: ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেত্রী ও রাজনৈতিক সংগ্রামী মারিয়া কোরিনা মাচাদো পারিস্কা ২০২৫ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
শুক্রবার নরওয়ের নোবেল কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর নাম ঘোষণা করে। ভেনেজুয়েলার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবিচল অবস্থান এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক রূপান্তরে ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
মারিয়া কোরিনা মাচাদো, যিনি ভেনেজুয়েলার “লৌহমানবি” হিসেবে পরিচিত, দীর্ঘদিন ধরে দেশটির স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন। তিনি একজন রাজনীতিবিদ, শিল্প প্রকৌশলী এবং বিরোধীদল ‘ভেন্তে’-এর জাতীয় সমন্বয়কারী।
নোবেল কমিটি জানায়, “মারিয়া কোরিনা মাচাদো ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। একনায়কতন্ত্র থেকে ন্যায্য ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তর নিশ্চিত করতে তাঁর দৃঢ় নেতৃত্ব অনন্য উদাহরণ।”
১৯৬৭ সালের ৭ অক্টোবর ভেনেজুয়েলায় জন্ম নেওয়া মাচাদো ২০০২ সালে ভোট-পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘সুমাতে’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেন। ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। ২০১২ সালে বিরোধী দলের রাষ্ট্রপতি প্রাইমারিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও হেনরিক ক্যাপ্রিলেসের কাছে পরাজিত হন।
আরও পড়ুনঃ রামগঞ্জে মা-মেয়েকে জবাই করে হত্যা, স্বর্ণালংকারসহ অর্ধ কোটি টাকার মালামাল লুট
২০১৪ সালের বিক্ষোভে রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিনি ছিলেন অন্যতম নেতৃত্বদানকারী মুখ। ২০২৩ সালে তিনি বিরোধী প্রার্থী হিসেবে প্রাথমিক নির্বাচনে জয়ী হন এবং ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ঐক্য প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হন। তবে সরকারের চাপের মুখে তাঁকে প্রার্থীতা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয় এবং পরে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হন।
মাচাদোর সংগ্রাম আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৮ সালে তিনি বিবিসির “১০০ জন অনুপ্রেরণাদায়ী নারী”-এর তালিকায় স্থান পান। ২০২৫ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে বিশ্বের “১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির” একজন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
উল্লেখ্য, গত বছর জাপানি সংগঠন “নিহন হিদানকিও” পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গঠনের প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেছিল। এবারের পুরস্কারে ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যোগ হলো ল্যাটিন আমেরিকার নারী নেতৃত্বের—যেখানে মারিয়া কোরিনা মাচাদো শান্তি ও গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে উঠে এলেন।