
তানিম তানভীর, ইবি প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়া শহরে মদের বোতল হাতে হাঁটছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষক — এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওর ব্যক্তি হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস. এম. শোয়েব। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ‘ফারাবী হাসান’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ১৯ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ভিডিওটি প্রথম পোস্ট করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি পলিথিন ব্যাগে মদের বোতল নিয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন শিক্ষক শোয়েব, আর পিছন থেকে কেউ ভিডিও ধারণ করছে।
ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়—“মদের বোতল হাতে কুষ্টিয়া শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শোয়েব। এই মাস্টার দিনের বেশিরভাগ সময় টাল থাকে, ছাত্রদের সাথেও বসে নেশা করে। ক্যাম্পাসের পাশের দোকান থেকেও তাকে মদ আনতে দেখা যায়।”
পোস্টটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন ফেসবুক পেজে, বিশেষ করে “University Update” নামের একটি পেজে শেয়ার হলে তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। সেখানে ভিডিওর নিচে অসংখ্য মন্তব্য করেন শিক্ষার্থী ও সাধারণ ব্যবহারকারীরা।
একজন মন্তব্য করেন, “এই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হোক এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।”
আরেকজন লেখেন, “শিক্ষক হিসেবে উনার আচরণ কোনো দিনই আদর্শ ছিল না।”
তবে কেউ কেউ বিষয়টিকে ব্যক্তিগত জীবনের অংশ বলেও মন্তব্য করেছেন। একজন লিখেছেন, “মানুষের ব্যক্তিগত জীবন বলে একটা বিষয় আছে। হয়তো তার জীবনে কোনো ব্যক্তিগত অস্থিরতা রয়েছে। শিক্ষক হিসেবে অবশ্যই এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।”
অন্যদিকে, কেউ কেউ ভিডিও ধারণ ও প্রকাশের ধরন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। যেমন একজন মন্তব্য করেন, “তিনি অন্যের জীবনে হস্তক্ষেপ করছেন না। কিন্তু অন্যরা কেন তার জীবন ভিডিও করে ছড়াচ্ছে?”
আরও পড়ুনঃ ছাতকে হাটবাজার উন্নয়নের আড়ালে কোটি টাকার ভিটা বাণিজ্য, সংঘাতের আশঙ্কা
বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক শোয়েবের সঙ্গে একাধিকবার অনলাইন ও অফলাইনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, “এ বিষয়ে আমি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অবগত নই। কেউ জানালে আমরা বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। এমন ঘটনা সত্যি হলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে এমন কর্মকাণ্ড পুরো ক্যাম্পাসের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।”
ক্যাম্পাসজুড়ে এখন একটাই আলোচ্য বিষয়— বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের এমন আচরণ শুধু ব্যক্তিগত মর্যাদা নয়, পুরো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।