‘যদিও আগে থেকেই জানতাম আমার গাওয়া কোরাসটুকু আসবে, তারপরও প্রথম গান বলেই হয়তো মনে একটা অজানা ভয় কাজ করছিলো। ৭ তারিখ বিকেলের দিকে যখন টিজারটি মুক্তি পেলো আর টিজারের শেষে নিজের কণ্ঠ শুনতে পেলাম, মনে হলো দুনিয়ার সব আনন্দ যেন আমার হাতে ধরা দিয়েছে।’ বলছিলেন সদ্য মুক্তি পাওয়া শাকিব খানের তুফান সিনেমার টিজারের “তুফান এলোরে” অংশে কণ্ঠ দেয়া খুবি শিক্ষার্থী সাম্যব্রত দৃপ্ত।
মঙ্গলবার বিকেলে যখন সারা বাংলায় আলোচনা চলছিলো শাকিব খানের তুফান সিনেমার টিজার নিয়ে। তখনই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বয়ে যাচ্ছিলো এক আনন্দের ঢেউ। কিন্তু কেন? সিনেমায় তো এখনো মুক্তি পায়নি। সিনেমা মুক্তি না পেলেও খুবি শিক্ষার্থী সাম্যব্রত দৃপ্ত যে তাঁর প্রথম প্লেব্যাক দিয়ে বাংলা সিনেমায় পদার্পণ করে ফেলেছেন, টিজারের শেষ অংশটুকু দেখে খুবি শিক্ষার্থীরা ততক্ষণে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন। আর ৩ জন শিল্পীর সাথে দৃপ্তর কণ্ঠও যে সমানভাবে খেলবে সিনেমাটির টাইটেল গানে তা বলতে তখন আর শিক্ষার্থীদের কোনো বাধা ছিলোনা।
দৃপ্ত বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনে ৪র্থ বর্ষে অধ্যায়নরত অবস্থায় রয়েছেন। সঙ্গীতের সাথে তাঁর পথচলার শুরু ছোটবেলা থেকেই। ২০১৩ সালের দিকে তিনি লক্ষ্য স্থীর করেন প্লেব্যাক করবেন। সেই থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি তাঁর সঙ্গীত চর্চা চলতে থাকে। আগ্রহের জায়গা থেকে তিলে তিলে তৈরি করে ফেলেন নিজের মিউজিক স্টুডিও।
আরও পড়ুনঃ সাংবাদিক নির্যাতন ও কাজে বাধা,নিন্দা জানিয়েছে বিএইচআরএফ
ইউটিউব দেখে ক্রমে শিখে ফেলেন স্টুডিওর কাজ। সেখানে জনপ্রিয় সব গানের কভার করে স্পটিফাইয়ে নিজের পেজে দিতে শুরু করেন। একসময় সেখানে তাঁর শ্রোতার সংখ্যা ৬০০০০ ছাড়িয়ে যায়। সাথে সাথে বিভিন্ন মিডিয়া হাউস থেকে কাজের সুযোগ আসতে শুরু করে তাঁর কাছে।
তুফান সিনেমায় কাজের সুযোগ কীভাবে আসলো জানতে চাইলে দৃপ্ত বলেন, ‘স্পটিফাইয়ের কাজের সুবাদে ২০২১ সালে সঙ্গীত আয়োজক নাভেদ পারভেজের সাথে আমি ফেসবুকে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাই। সেই থেকে তাঁর সব পোস্ট অনুসরণ করতাম। কিছুদিন আগে তিনি পোস্ট করেন নতুন একটি গানের জন্য নতুন কণ্ঠ খুঁজছেন লিখে। সেখানে আমি আগ্রহ প্রকাশ করি। গানটি গেয়ে পাঠালে তিনি আমার কণ্ঠ পছন্দ করেন।
এরপর এপ্রিল মাসের শেষের দিকে তিনি আবার আমার সাথে যোগাযোগ করেন সিনেমার একটি গানের কোরাস করে দেওয়ার জন্য। আমি কোরাসটি করে পাঠালে তিনি আমাকে অভিনন্দন জানান প্রথম সিনেমা ডেবুটের কথা বলে। আমার কাছে সবকিছু কেমন ধোঁয়াশা ধোঁয়াশা লাগছিলো। এরপর যখন ৭ তারিখ “তুফান” সিনেমার টিজারে নিজের কণ্ঠ শুনলাম তখন সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেলো। এর জন্য আমি নাভেদ পারভেজ ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। আরেকটি বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো, গানটির কোরাস অংশটুকু আমার গাওয়া। এছাড়াও গানে র্যাপ ও গায়কীর ভূমিকায় আরো ২ জন রয়েছেন। ‘
এদিকে দৃপ্তর এই সাফল্যে তার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন আরেক তুফান বয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের প্রধান সারা মনামী হোসেন বলেন, ‘খবরটা শোনার পর থেকেই আমার এতো খুশি লাগছিলো যে আমি বাড়িতে গিয়ে সবাইকে একবার করে টিজারটি দেখিয়েছি। ক্লাসেও দেখেছি দৃপ্ত খুবই শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের একজন ছেলে। তার এই অর্জন শুধু গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনেরই নয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অর্জন বলে আমি মনে করি। ডিসিপ্লিনের পক্ষ থেকে তার জন্য শুভকামনা রইলো৷’