মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী : প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষ সহ সকল বৃক্ষ হত্যা বন্ধে আইন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মারকলিপি দিয়েছে রাজশাহীর তরুণ সংগঠন ইয়্যাস (ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ)। রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি দেন সংগঠনটির নেতারা।
আজ মঙ্গলবার (০৪ জুন) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে একটি প্রতিনিধিদল রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের একান্ত সচিব আফিয়ান নজমুর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে তার হাতে স্মারকলিপির কপিটি তুলে দেন।
স্মারকলিপির অন্যতম দাবিগুলো হলো- পরিবেশ সুরক্ষায় বৃক্ষনিধন বন্ধে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষসহ সকল প্রকার বৃক্ষ সংরক্ষণে যুগোপযোগী আইন দ্রুত প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন; দেশের পুকুর-দিঘী, খাল-বিল-খাড়ি, হাওর-বাওড়, নদী-নালা, জলাশয়-জলাধারগুলো সুরক্ষায় সেগুলোকে ভরাট বন্ধ, দখল-দূষণমুক্ত এবং লিজপ্রথা বাতিল করে তাতে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা; খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্র, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যানগুলো সুরক্ষায় দখল-দূষণমুক্ত এবং লিজপ্রথা বাতিল করে তাতে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুনঃ বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে সামনে রেখে পাঁচ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন
আরও ছিলো, পরিবেশ-প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করে সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করা; উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে সুবিধাভোগী (স্টেকহোল্ডার) স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও জনসংগঠনের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করা; কৃষি জমি সুরক্ষায় ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন রোধ, কৃষি জমি নষ্ট করে পুকুর খনন বন্ধে ভূমি ব্যবহার আইন দ্রুত প্রণয়ন ও বাস্তাবায়ন করা।
আরও যুক্ত করা হয়, বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূমি পূণরুদ্ধার, খরা সহনশীলতা, মরুময়তা ও পানিসংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ বিশেষ বরাদ্দ নিশ্চিত করা এবং বিশেষ ‘খরা তহবিল’ গঠন ও খরাপিড়িতদের জন্য ‘খরা ভাতা’ চালু করা; নদ-নদীগুলোকে দখল-দূষণমুক্ত করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নদ-নদীগুলোর গতিপথ অপরিবর্তিত রেখে যথাযথভাবে ‘ক্যাপিট্যাল ড্রেজিং’ করে দেশের অভ্যান্তরীন ও আন্তর্জাতিক “নৌ পথ” চালু করা।
ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাস’র সভাপতি মো. শামীউল আলীম শাওন, সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বাশার রজন নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা আলী মেঘলা নির্বাহী সদস্য ফারজানা নাজনীন মুন্নি, নির্বাহী সদস্য জনি প্রমাণিক সদস্য জীম আহম্মেদ ও মো. জাবেদ সাকিল যৌথ স্বাক্ষরিত এ স্মারকলিপিতে পরিবেশ-প্রতিবেশ, প্রাণপ্রকৃতি ও প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষায় ১২ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়াও প্রতিনিধি দলটি রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, রাজশাহীর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মীর ইকবাল, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে মেয়রের দফতরে গিয়ে রাসিক মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী বিপুল কুমার সরকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের হাতে স্মারকলিপির কপি তুলে দেন।
সংহতি জানিয়ে স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর দেন, হেরিটেজ রাজশাহীর সভাপতি লেখক, নদী ও পরিবেশ গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহক ওয়ালিউর রহমান বাবু, পরিবেশ আন্দোলন ঐক্য পরিষদেও সভাপতি মাহবুব টুংকু ও সম্পাদক নাজমুল হোসেন রাজু, সেভ দি ন্যাচার এন্ড লাইফ’র চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজান, রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদ’র সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম, প্রচেষ্ঠা জনকল্যান সংস্থার সভাপতি মোকলেসুর রহমান সুন্দরী।
আরও স্বাক্ষর দেন, স্বপ্নচারী সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি রুবেল হোসেন মিন্টু, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক নাদিম সিনা, গ্রীন ভয়েসের বিভাগীয় সহ সমন্বয়ক আব্দুর রহিম, তরুণ লেখক ও মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের সাংবাদিক সবনাজ মোস্তারি স্মৃতি, সচ্ছলতা এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সালমান ফার্সী, ভঙ্গী নৃত্য শিল্পালয়ের সাধারণ সম্পাদক নৃত্যশিল্পী মো. রবিন শেখ, নিউজনাউ টুয়েন্টিফোরের সাংবাদিক তানজিলা আক্তার মিমি, রাজশাহী কোর্ট কলেজের শিক্ষার্থী মো. রিদয় হোসেন।