spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদসারা বাংলারাজশাহীপুলিশ বক্সের সামনে রমরমা জুয়ার আসর, নীরব প্রশাসন

পুলিশ বক্সের সামনে রমরমা জুয়ার আসর, নীরব প্রশাসন

মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল পুলিশ বক্সের সামনে দীর্ঘদিন যাবৎ রমরমা জুয়ার আসর চলছে। এ জুয়ার আসরে দিন রাত ২৪ ঘন্টা চলে জুয়া। মোটা অংকের মাসোহারায় প্রশাসন ম্যানেজ করেই চলছে এ জুয়ার আসর বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ জুয়ার আসরের কারণে নিম্ন আয় ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেই এখন নি:স্ব। জুয়াড়িরা নি:স্ব হলেও মালিক পক্ষ হচ্ছেন লাভবান। এখানে প্রতিদিন হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা৷ অথচ পুলিশ বক্স বলছে উলটো কথা। তাঁরা বলছেন জুয়া সেখানে চলে না, সেখানে শ্রমিকরা বসে আড্ডা দেয়। এ পুলিশ বক্সের বিরুদ্ধেও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। ফুটপাত থেকে মাসিক মাসোহারা উত্তোলন। আটক বানিজ্যসহ প্রতিদিন চলে সাধারণ যাত্রী হয়রানি।

জানতে চাইলে বাস টার্মিনাল এলাকার সাধারণ মানুষ বলেন, একজন প্রভাবশালী শ্রমিক নেতার ছত্রছায়া এ জুয়ার বোর্ড চলে। প্রতিদিন থানা ও ডিবি পুলিশের গাড়ির এসে টাকা নিয়ে যায়।

সাবেক এক শ্রমিক নেতা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, মিনি ক্যাসিনো চলছে সেখানে। শ্রমিকদের শ্রমের পয়সা হাতিয়ে নিতে এমন আয়োজন। অনেক শ্রমিকের পরিবার আজ নি:স্ব প্রায়। জুয়ার বোর্ডের মূল হোতা বাস মালিক সমিতির সহ সাধারন সম্পাদক মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ। তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২৭ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ মনিরুজ্জামান মনির পিতা।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাব-৫ মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করলেও পুলিশ ডিবির ভুমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। জনশ্রুতি আছে এ জুয়ার বোর্ডে পুলিশ প্রশাসন অভিযান করতে ভয় পায়। তবে প্রতিদিন ডিউটিরত পুলিশের অনেক গাড়ি সেখানে আসে এবং এরশাদ নামে একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। এটা অনেকটা ওপেন সিক্রেট। সবাই সব জানলেও কেনো প্রশাসন নীরব তা নিয়ে চলছে গুণজন।

টার্মিনালের এক দোকানি বলেন, এসব রমরমা জুয়ার ব্যবসা চালানোর কারণে জুয়ায় আসক্ত নিম্ন আয়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উৎসাহিত হচ্ছে। এসব কারণে একদিকে যেমন বাড়ছে সামাজিক বিশৃঙ্খলা, অন্যদিকে বাড়ছে পারিবারিক বিবাদ-কলহ, চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড।

আরও পড়ুনঃ সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, আহত ৭

তিনি আরও বলেন, এসব জুয়ায় নগরীর টোকাই, ভিক্ষুক, নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির ঠেলাচালক, ভ্যানচালক, রিকশাচালক, সিএনজি চালক, বাসচালক, মাইক্রোবাস চালক, ট্রাকচালক, পিকআপ চালক, হেলপার, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র, বেকার যুবকরা রাতারাতি বড়লোক হওয়ার লোভে এসব জুয়ার আসরে সারাদিনের ইনকাম বিনিয়োগ করে দিনশেষে প্রতারিত হয়ে খালি হাতে বাসায় ফেরে। ফলে একদিকে যেমন বাসায় অশান্তি-কলহ সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে পরিবারের আহার জোগাতে চুরি-ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়ে এসব জুয়াড়িরা।

রাজশাহীর মাননীয় মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ও পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার যেখানে সোজা নিদের্শ দিয়েছেন কোনো অবৈধ কাজ ও দুর্নীতি থাকবে না রাজশাহী মহানগরীতে। তবু কিভাবে পুলিশের সামনে এমন রমরমা জুয়ার আসর সব সময় চলতে আছে। তা বোধগম্য নয় সুশীল সমাজের মানুষের কাছে।

এ বিষয়ে টার্মিনাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জের সরকারি নম্বরে ফোন দিলে ইনর্চাজের ফোন অন্যজন ধরে বলেন স্যার অসুস্থ। পরে কথা বলেন।

বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির বলেন, আমরাও বিষয় জেনেছি। কিন্তু শ্রমিক নেতারা বলেন সেখানে শ্রমিক ছাড়া কেউ থাকে না। ওখানে শ্রমিকরা নাকি আড্ডা দেয়। তবে বিষয়টি এখন গুরুত্বের সঙ্গে আমরা দেখছি।
আরএমপি পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র এডিসি জামিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ দিলে তথ্য প্রমাণ যাচাই করে অভিযান দিবো৷