ফরিদপুরে ভাঙ্গা উপজেলার খাদ্য কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম উপজেলা খাদ্য কর্মসূচির ডিলারের কাছ থেকে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপলোড হওয়া দুই মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে যাওয়ায় ফরিদপুর জেলা জুড়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। চায়ের দোকানে, বাজারে ও আড্ডায় এটি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলার আলগি ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব ডিলার মো. আসাদুজ্জামান ও ঘারুয়া ইউনিয়নের আবুল বাশার মিয়ার হাত থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিচ্ছেন ভাঙ্গা উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। এ সময় এক ডিলারকে বলতে শোনা যায়, ‘স্যার যে কয়বার যাওয়া লাগে আপনি যাইয়েন, কোনো লোক পাঠাইয়েন না। আপনি নিজে খারাপ কথা বইলেন, কিন্তু অন্য কাউকে দিয়ে বইলেন না। পাশ থেকে আরেকজন বলেন, ‘স্যার যা বলার আপনি বলে দিয়েন। সব কয়জন আপনার ডিলার, কোনো অনিয়ম করে না।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে ছাত্রদলের কর্মিসভা থেকে গ্রেপ্তার জেলা ছাত্রদল সভাপতি আদনান
এ বিষয়ে ডিলার আবুল বাশার মিয়া জানান, খাদ্য কর্মকর্তা স্যারের সঙ্গে আমাদের কোনো লেনদেন হয় নাই। আমরা খাদ্যবান্ধব ডিলার রাজ্জাক স্যারের সঙ্গে লেনদেন করি। অনেক সময় টিসিবির মালের টাকা তার কাছে জমা রাখি। কিন্তু তরিকুল স্যারের কাছে কোনো টাকা লেনদেন করেছি বলে আমার মনে পড়ে না।’
তবে ভিডিওর বিষয় ভাঙ্গা উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, যে ভিডিও দেখেছেন বাস্তবে তা সত্য নয়। আমার থেকে তারা টাকা ধার নিয়েছিল, সেটা ফেরত দিয়েছে। তাদের সাথে আমার সম্পর্ক ভালো। আর এটি কে ষড়যন্ত্র করে ভিডিও করেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তরিকুল জানান, আমি যখন টাকা ধার দিয়েছিলাম সেটির তো কোন ভিডিও নেই’।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম কুদরত-এ-খুদা বলেন, আমি এখনো ভিডিওটা দেখিনি। ঘুষ লেনদেনের ভিডিও যদি ভাইরাল হয়ে থাকে, তাহলে তদন্ত করে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফরহাদ খন্দকার জানান, ভিডিওটি আমি দেখেছি। আসল ঘটনা কি জানি না! যদি ঘুষ লেনদেনের ঘটনাটি সঠিক হয়, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ফরহাদ খন্দকার।
এই বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ফরিদপুর সদর উপজেলার উপ খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আফজাল হোসেন ও কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক মো. সাখাওয়াত হোসেন কাজী এই দুইজনকে আহবায়ক করে, ২ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি ঘটন করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন কার্য দিবসের সময় বেধে দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফরহাদ খন্দকার ও ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম কুদরত-এ-খুদা।