মোঃ আবু হায়াৎ, সুনামগঞ্জ (জেল) প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃষ্টিপাত ছাড়াই ভোর ৫টা থেকে বৃদ্ধি পেতে থাকে পাহাড়ি ঢলের পানি। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে দুপুরে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার বা ২.২৩ ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শহরের কাঁচাবাজারে হাঁটুর উপরে পানি। পশ্চিমবাজার, মধ্যবাজারে বন্যার পানি উঠছে।
বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে শহরে ঢুকছে পানি। হুট করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শহরবাসী। নদীর পাড়ের বাসিন্দারা ঘরে থাকার মতো অবস্থা না থাকায় ঘরবাড়ি ছাড়তে শুরু করেছেন। অনেকে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে জেলার সকল নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্বাঞ্চলের মানুষের বসত ঘরে পানি উঠে গেছে। ছাতকেও বিপদসীমার ১৫৫ সে.মি বা ৫.০৯ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বিশ^ম্ভরপুরে বিপদসীমার ২ সে.মি বা ০.৭৯ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যার আশংকা করছে প্রশাসনও।
অপরদিকে পাহাড়ি ঢল নেমে আগে থেকেই প্লাবিত ছিল সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, তাহিরপুরের দেড় শতাধিক গ্রাম। নতুন করে পানি বাড়ায় বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগর, দিরাই সহ জেলার প্রায় সবকয়টি উপজেলাতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ‘চট্টগ্রামে সাড়ে ৩টার মধ্যে ৮০শতাংশ কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কার’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ পৌর শহরে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার বা ২.২৩ ফুট, ছাতকে বিপদসীমার ১৫৫ সে.মি বা ৫.০৯ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বিশ^ম্ভরপুরের শক্তিয়ারখলা পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সে.মি বা ০.৭৯ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে, সেজন্য পানি বিপদসীমার উপরে থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জের লাউড়েরগড় পয়েন্টে ১৫৯ মি.মি, ছাতকে ৯৫ মি.মি, সুনামগঞ্জ পৌর শহরে ৬৮ মি.মি এবং দিরাইয়ে ৬৬ মি.মি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, নদীতে পানি টইটুম্বুর রয়েছে। নদীতে আর পানি ধারণ ক্ষমতা নাই। বন্যার আশংকা রয়েছে। এছাড়াও আগামী দুইদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীও রয়েছে। এছাড়াও অতিরিক্ত ত্রাণ সামগ্রীর জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছি।