মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে চট্টগ্রামে প্রায় প্রতিটি মিছিলে অংশ গ্রহণ করে আসছিল ওয়াহেদ হাসান। সেদিন ১৯ জুলাই পূর্ব ঘোষিত আন্দোলনে চট্টগ্রামের শাহী জামে মসজিদ আন্দরকিল্লায় নামাজ শেষে মুসল্লিদের সাথে মিছিলে যোগ দিলে পুলিশ সেখানে ধাওয়া এবং বেধড়ক লাঠিপেটা করে। পুলিশের লাঠির আঘাতে হাত-পা ভাঙ্গা অবস্থায় লালদীঘির পাশের নালায় পড়েছিল ওয়াহেদ হাসান নামের এক যুবক।
সেখান থেকে তার সহকর্মীরা উদ্বার করে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন সেখানে সন্তোষজনক কোন চিকিৎসা না পাওয়ায় পরেরদিনই সহকর্মীরাসহ পরিবারের লোকজন ইসলামি ব্যাংক হাসপাতাল আগ্রাবাদে নিয়ে যায়, ওখানেই তার চিকিৎসা হয় এবং পরেরদিন ২১ জুলাই গ্রামের বাড়ি লোহাগাড়ায় নিয়ে আসে। এখনো দুশ্চিন্তায় এবং ব্যথার যন্ত্রনায় বিছানায় কাতরাচ্ছে ওয়াহেদ।
জানা যায়, গুরুতর আহত ওয়াহেদ লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড সর্দানী পাড়ার হারুনর রশিদের ছেলে। পরিবারে ৫ ছেলে মেয়ের মধ্যে সে তৃতীয়। মধ্যবিত্ত পরিবারের ওয়াহেদ চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করার পর সংসারের অভাব অনটনে বাধ্য হয়ে পড়ালেখা ছেড়ে চট্টগ্রামের একটি তাজ নামক সার্জিক্যাল প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি নেয় এবং পরিবারের কিছুটা অবদান রাখতে শুরু করে।
একদিকে গুরুতর আহত সন্তানের চিকিৎসা খরচ অপরদিকে সংসারের খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তার বাবা হারুনর রশিদ। তিনি বলেন- গত বছর আগষ্টের বন্যায় আমার ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে একদম নিঃস্ব হয়ে যাই, তখন থেকে পরিবারকে নিয়ে লোহাগাড়া শহরে বাসা ভাড়ায় থাকি, বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত আমার ঘরটিও অর্থাভাবে এখনো পর্যন্ত কোনরকম সংস্কার করতে পারিনি, লোহাগাড়া কাঁচা বাজারে ছোট্ট একটি মুদির দোকান করে বাচ্চাদের লেখাপড়া খরচ, চিকিৎসা খরচসহ সবকিছু চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুনঃ ফুলপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-১, আহত-৩
তিনি আক্ষেপ করে আরও বলেন- আমার ছেলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে আহত হয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছে এমনকি সেদিনের ঘটনায় জাতীয় দৈনিক নয়াদিগন্তে একটি রিপোর্টও হয়। এখনও পর্যন্ত কেউ দেখতেও আসেনি চিকিৎসার খোঁজ খবরও নেয়নি ।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইনামুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন ওয়াহেদ হাসানের আহত হওয়ার খবর আমি কোন মাধ্যমে জানতামনা, এখন জেনেছি, পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ আবেদন করেনি, আবেদন পেলে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা দিব।