মোঃ মাসুদ রানা মনি লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরে বন্যা এমন মারাত্মক আকার ধারন করেছে যে এ পর্যন্ত এ জেলায় শুধুমাত্র প্রাণিসম্পদেরই ক্ষতি হয়েছে ৮কোটি ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা।
আজ সোমবার সকালে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
লক্ষ্মীপুরে ভয়াবহ বন্যার কারণে অবকাঠামো ও খাদ্য বিনষ্টসহ খামারি-গৃহস্থদের অসংখ্য পশুপাখি মারা গেছে।
এখনও ৯ লাখ ৬১ হাজার ৫১০টি পশু-পাখি বন্যা কবলিত রয়েছে। এতে খামারিসহ গৃহস্থরা বড় ধরনের আর্থিক বিপর্যয়ে পড়েছেন। লক্ষ্মীপুর প্রাণিসম্পদ বিভাগের ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানিয়েছে , বন্যার অতিরিক্ত পানির কারণে লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্নস্থানে খামার ও গৃহস্থের ১ লাখ ৬০ হাজার ২১৩টি পশুপাখি মারা গেছে।
এর মধ্যে ৩৫টি গরু, ১৭৫টি ছাগল, ১৭টি ভেড়া ও একটি মহিষ এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার ১০টি মুরগি ও ৯৭৫টি হাঁস মারা গেছে। এতে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৩ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গবাদিপশুসহ ৩০৩টি খামারের অবকাঠামোগত ক্ষতি ৭৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা, হাঁস-মুরগিসহ ৪২৩টি খামারের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। এছাড়া ১ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকার পশুপাখির খাদ্য বিনষ্ট হয়েছে বন্যায়।
এতে আরও জানানো হয়েছে, ৯০০ গবাদিপশু ও ১২ হাজার ৯০০ হাঁস-মুরগিকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ৮৪১টি গবাদিপশু ও ৩০ হাজার ৩৬৫টি হাঁস-মুরগিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বন্যা ও জলাবদ্ধতার কারণে ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগরে ১৩ হাজার ৭৯০ একর জমি প্লাবিত হয়েছে। মেঘনা উপকূলীয় এ জেলায় প্রথমে ভারী বর্ষণ ও নদীর জোয়ারের কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। প্রথমে রামগতি ও কমলনগরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানিবন্দি ছিল।
আরও পড়ুনঃ ছাত্র আন্দোলনে আহত ওয়াহেদ কাতরাচ্ছে বিছানায়, খবর নেয়নি কেউ
গত ২৩ আগস্ট থেকে ফেনী-নোয়াখালীর বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে চাপ দেয়। এতে লক্ষ্মীপুরের জলমগ্ন হয়ে পড়ে প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ। চারদিকে পানি থই থই। অনেক এলাকায় কোমর-গলা সমান পানি রয়েছে। ঘর-বাড়ির ভেতরেও পানি। এতে পানি ও আবহাওয়াজনিত কারণে ১ লাখ ৬০ হাজার ২১৩টি পশুপাখি মারা যায়।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কুমুদ রঞ্জন মিত্র বলেন, বন্যা জলাবদ্ধতার কারণে লক্ষ্মীপুরে ৩০৩টি গবাদিপশুর ও ৪২৩টি মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক গবাদিপশু ও মুরগি মারা গিয়ে খামারিদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এ থেকে উত্তরণে মাঠ পর্যায়ে আমাদের লোকজন কাজ করছেন। এখনও ৯ লাখ ৬১ হাজার ৫১০টি পশুপাখি বন্যা কবলিত হয়ে আছে। তবে এ হিসাব বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে।