
ধানমন্ডি-৮ এ ডাকাতির ঘটনায় আটক নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা তুঙ্গে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, উচ্চবিত্ত বা উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা কেন এই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে?
এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। কিছুদিন আগেই বুয়েটের এক মেধাবী ছাত্রকে গাড়ি ছিনতাইয়ের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া মানেই উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা, সেই বুয়েটের একজন ছাত্র কেন অপরাধের পথে পা বাড়াল?
এই দুই ঘটনার পটভূমি ভিন্ন হলেও একটি জায়গায় মিল রয়েছে—তারা সবাই ছিল সামাজিকভাবে সচ্ছল এবং শিক্ষিত পরিবার থেকে আসা। তাহলে কি শুধুমাত্র আর্থিক অনটনই অপরাধের কারণ? নাকি এর পেছনে আরও গভীর কোনো সামাজিক অবক্ষয় লুকিয়ে আছে?
আজকের সমাজে নৈতিক শিক্ষা, পারিবারিক মূল্যবোধ এবং ধর্মীয় অনুশাসনের অভাব দিন দিন প্রকট হচ্ছে। প্রযুক্তির প্রসার, ভোগবাদী সংস্কৃতি ও বিকৃত প্রতিযোগিতার ফলে তরুণরা সৎ উপায়ে উন্নতি করতে না পারলে দ্রুত বিকল্প পথ খোঁজে। সহজে অর্থ উপার্জনের প্রবণতা, বিলাসী জীবনধারার প্রতি আসক্তি, এবং সঠিক দিকনির্দেশনার অভাব অনেককে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এক্ষেত্রে কেবল রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সন্তানদের শুধু ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ভর্তি করানো যথেষ্ট নয়, বরং নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন করা প্রয়োজন। পরিবার ও সমাজ যদি তরুণদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয়, তবে আরও অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী পথভ্রষ্ট হবে।
আরও পড়ুনঃ জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২
অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যেমন জরুরি, তেমনই জরুরি এই পরিস্থিতির গভীরে গিয়ে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া। সমাজের জন্য সম্ভাবনাময় তরুণদের কীট হয়ে যাওয়ার ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেটাই সকলের প্রত্যাশা।
লেখকঃ
মোঃ ইকরাম হাসান
কলামিস্ট ও সোশ্যাল এক্টিভিস্ট