মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ আশুলিয়ায় এইচএসসি পাস ভুয়া চিকিৎসকের ভুল অপারেশনে পারভিন আক্তার নামের এক প্রসূতি নারীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে কোনাপাড়া কলাবাগান এলাকায় নিউ পপুলার হসপিটালে এ ঘটনা ঘটে। পারভিন আক্তার রাজবাড়ী সদরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। স্বামী ও চার সন্তান নিয়ে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি দীঘিরপাড় এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
ঘটনার পর উত্তেজিত স্বজনরা আটকে রাখেন চিকিৎসককে। পরে জানা যায় তিনি চিকিৎসক নন, তবে ৭০টির বেশি অপারেশন করেছেন। অভিযুক্ত চিকিৎসক আতিকুর রহমান গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সূত্রাপুর এলাকার মৃত বোরহান উদ্দিনের ছেলে। তিনি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। বিএমডিসি ওয়েবসাইটে তার রেজিস্ট্রেশন নম্বরে প্রবেশ করলে অন্য একজনের ছবি ও নাম আসে। তাও ২০০৩ সালে মেয়াদ শেষ হয়েছে।
স্বজনরা জানায়, দুপুরে আশুলিয়ার নিউ পপুলার হসপিটালে প্রসূতি নারীকে ভর্তি করা হয়। মোবাইল ফোনে ডেকে আনা হয় নিয়মিত চিকিৎসক আতিকুর রহমানকে। পরে অপারেশন চলাকালে রুম থেকে হঠাৎ করে বেরিয়ে যান তিনি। এ সময় স্বজনদের জানানো হয় রোগীর অবস্থা গুরুতর। তবে রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে জানতে পেরে আটকে রাখে চিকিৎসককে।
এ সময় মৃত্যুর পরেও স্বজনদের বিষয়টি না জানিয়ে কথিত চিকিৎককে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আমরা আটকে রাখি। বাড়ির কাছে হওয়ায় এই হাসপাতালে অপারেশন করাতে আসে। কিন্তু ভুয়া ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করায় পারভিন মারা গেছেন। আমরা এর বিচার চাই।
আরও পড়ুনঃ আশুলিয়ায় একাধিক হত্যা মামলার আসামি ইউপি সদস্য সাদেক ভূইয়া গ্রেপ্তার
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৯টা) অভিযুক্ত আতিকুর রহমানকে হাসপাতালে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, এর আগে তিনি অনেক সিজারিয়ান অপারেশন করেছেন। কিন্তু এই রোগীর ক্ষেত্রে তার পেটেই অপারেশনের আগে থেকেই রক্তক্ষরণ হয়। ফলে তিনি স্ট্রোক করে পরবর্তীতে মারা যান। তার কোনো ভুল ছিল না। এ ছাড়া দীর্ঘ ১৫ বছর তিনি রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করেন না। তাই সেটা বিএমডিসির ওয়েবসাইটে দেখাচ্ছে না।
চিকিৎসক কি না- জানতে চাইলে আতিকুর রহমান জানান, এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন। অন্য একজনের আইডি ব্যবহার করেন। এই হাসপাতালে তিনি ৪০টির বেশি অপারেশন করেছেন।
হাসপাতালের মালিক মজিবুর রহমান জানান, আতিকুর রহমান ভুয়া ডাক্তার কি-না, জানা নেই। যারা ডিউটি ডাক্তার আছেন তাদের কাগজপত্র জমা নেওয়া হয়। কিন্তু তাকে কল করে আনা হয়। তাই কাগজপত্র নেওয়া হয়নি। এখন আইনগতভাবে যা হওয়ার হবে। পালিয়ে যেতে সাহায্য করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
আশুলিয়া থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।