মোঃ তরিকুল ইসলাম কলাপাড়া (উপজেলা) প্রতিনিধিঃ প্রতি বছরের মতো এ বছরও কলাপাড়ার কৃষকরা আমন ধানের বাম্পার ফলন পেয়েছেন। বৈরী আবহাওয়া ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সত্ত্বেও কৃষকেরা প্রচুর পরিমাণে ফসল উৎপাদন করতে পেরেছেন। বাম্পার ফলনে কৃষকদের মধ্যে দেখা গেছে আনন্দের উচ্ছ্বাস।
উপজেলার নীলগঞ্জ, মহিপুর, পাখিমারা, কুয়াকাটা পৌরসভা ও লতাচাপলীসহ প্রতিটি ইউনিয়নে আমন ধানের ফলন গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কোনো কোনো এলাকায় ইতোমধ্যেই ধান কাটার কাজ শুরু হয়েছে। অনেক কৃষক এখন ধান মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত হবে, আবার কেউ ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিছু এলাকায় ধান এখনো পরিপক্ক হয়নি, তবে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেসব ধানও ঘরে তোলা যাবে বলে আশাবাদী কৃষকরা।
কৃষকের প্রত্যাশা লাভজনক মূল্যঃ ৭নং লতাচাপলী ইউনিয়নের আলি জানান, তিনি প্রায় ৩ কানি জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। আল্লাহর রহমতে বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও তাঁর ফসলের কোনো ক্ষতি হয়নি। তিনি জানান, “আমার খরচ যা হয়েছে, তার দিগুণ লাভ হবে বলে আশা করছি।
অপরদিকে, কুয়াকাটা পৌরসভার ব্যবসায়ী এবং কৃষক মোঃ আব্দুর রহমান দেওয়ান জানান, “বৈরী আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কায় চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। নিজ জমিতে আমন ধান চাষ করে খুব ভালো ফলন পেয়েছি। এদিকে লতাচাপলীর মোঃ মোকলেছ হাওলাদার বলেন যদি সঠিক দাম পাই, তাহলে খরচ কাটিয়ে লাভবান হব।”
এ ধরনের উচ্ছ্বাস দেখা গেছে উপজেলার প্রতিটি কৃষকের মধ্যে। কৃষকদের একমাত্র দাবি, তারা যেন ফসলের ন্যায্যমূল্য পান।
আরও পড়ুনঃ দেড় যুগেও সংস্কার হয়নি রামগঞ্জের কচুয়া বাজার-সমিতির বাজার সড়ক
কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতাঃ কলাপাড়া উপজেলায়, এ বছর প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। আমনের ফলন গত বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি হেক্টরে সাড়ে ৪ দশমিক ৫ মেট্রিক টন ধান পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কৃষকদের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন কলাপাড়া কৃষি বিভাগ। তাদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতেও যথেষ্ট চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”
কৃষি বিভাগের নিবিড় তত্ত্বাবধান এবং সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের দেওয়া সার ও অন্যান্য সুবিধা ভালো ফলনে সহায়তা করেছে।
আশাবাদী কৃষক পরিবারঃ বাম্পার ফলনের এই সাফল্যে উপজেলার প্রতিটি কৃষক পরিবার নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছে। তাঁদের আশা, সঠিক মূল্য নিশ্চিত করা হলে এই সাফল্য জীবনে অর্থনৈতিক স্থিতি আনবে।
কলাপাড়া উপজেলায় এবার বাম্পার ফলন শুধু কৃষকদের জন্য নয়, পুরো অঞ্চলের অর্থনীতির জন্যও আশার আলো হয়ে উঠেছে।