মোঃ তরিকুল ইসলাম কলাপাড়া (উপজেলা) প্রতিনিধিঃ উপকূলের প্রান্তিক কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ক্রেতাদের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে কলাপাড়ায় স্থাপিত হয়েছে কৃষক বাজার। মধ্যস্বত্বভোগী ও অতিরিক্ত খাজনা ছাড়াই এ বাজারে কৃষকরা তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারছেন, যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্যই স্বস্তিকর।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রেসক্লাব সংলগ্ন এলাকায় এ কৃষক বাজারের উদ্বোধন করা হয়।
সহযোগিতায়: কলাপাড়া পৌরসভা ও আমরা কলাপাড়াবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর থেকেই বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে বাজারে উপস্থিত হন। বাজারজুড়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সরব উপস্থিতিতে এক প্রাণবন্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে তাজা সবজি ও অন্যান্য কৃষিপণ্য কিনতে পেরে ক্রেতারা যেমন খুশি, তেমনি ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত কৃষকরাও।
সবজি কিনতে আসা ক্রেতা বলেন, “এটি অত্যন্ত সুন্দর একটি উদ্যোগ। মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এটি অনেক স্বস্তিদায়ক, কারণ সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে সবজি কেনা সম্ভব হচ্ছে। এতে আমাদের অর্থ সাশ্রয় হবে।”
অপর এক ক্রেতা বলেন, “বর্তমানে বাজারে সিন্ডিকেটের কারণে শাকসবজি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ঠিক এই সময়ে কলাপাড়ায় কৃষক বাজার চালু হওয়ায় আমরা অনেক উপকৃত হবো। আমাদের দাবি, এই বাজারটি যেন স্থায়ী করা হয়।”
‘আমরা কালাপাড়াবাসী’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, “উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা এই কৃষক বাজার চালু করেছি। এটি কৃষক এবং ক্রেতা—উভয়ের জন্যই স্বস্তিদায়ক। এখানে কোনো সিন্ডিকেট ছাড়াই ক্রেতা-বিক্রেতারা সরাসরি লেনদেন করতে পারছেন। ভবিষ্যতে সবজি ছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এই বাজারে বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে।”
আরও পড়ুনঃ অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে দেশের জন্য বিপদ আছে : এ্যানি
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “খাদ্য মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে একটি। কিন্তু দেশে মাঝে-মধ্যে সিন্ডিকেটের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতেই এ কৃষক বাজারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং ‘আমরা কালাপাড়াবাসী’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এই বাজার পরিচালিত হচ্ছে।”
উপকূলীয় এলাকার কৃষকদের জন্য এ ধরনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, যা কৃষকদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং ক্রেতাদের ন্যায্যমূল্যে পণ্য প্রাপ্তিতে ভূমিকা রাখবে।