নাহিদ হাসান, বগুড়া প্রতিনিধিঃ সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বগুড়ায় পলিথিনের ব্যবহার অবাধে চলছে। পলিথিনের উৎপাদন, মজুদ এবং বিক্রির বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান এবং জরিমানার পরও থামছে না এই ক্ষতিকর পণ্যটির ব্যবহার। জানা গেছে, জেলায় ২০টিরও অধিক কারখানায় দিনরাত অবৈধভাবে পলিথিন উৎপাদন হচ্ছে, যা স্থানীয় বাজারসহ অন্যান্য জেলাতেও সরবরাহ করা হচ্ছে।
বগুড়া শহরের রাজা বাজার, ফতেহ্ আলী মাছের বাজার এবং বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার অব্যাহত রয়েছে। বিক্রেতারা জানান, ক্রেতারা নিজেরা ব্যাগ নিয়ে না আসায় বাধ্য হয়ে পলিথিন দিতে হচ্ছে। মাছ ও মুড়ি বিক্রেতাদের মতে, পলিথিন ছাড়া এসব পণ্য বিক্রি প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফতেহ্ আলী কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, “ক্রেতারা ব্যাগ নিয়ে আসেন না। তাই আমাদের পলিথিন ব্যাগ দিতে হয়। না দিলে তারা পণ্য কিনতে চান না।” মাছ ব্যবসায়ী সঞ্জিব দাস জানান, “১০০ টাকার মাছ কিনলে ক্রেতারা ১০ টাকার বিকল্প ব্যাগ কিনতেও রাজি নন।” মুড়ি ব্যবসায়ী কৌশিক চন্দ্র বলেন, “মুড়ি সংরক্ষণের জন্য পলিথিন প্রয়োজন। পাটের পলিথিনের কথা শুনেছি, তবে তা সহজলভ্য নয়।”
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহথীর বিন মোহাম্মদ জানান, জেলায় প্রায় ১,৬৭২ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে এবং ৬৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। রাজা বাজারের জি এন্টারপ্রাইজ থেকে ১,৪০০ কেজি পলিথিন জব্দ এবং বগুড়া বিসিকের একটি কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। তিনি জানান, “মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
আরও পড়ুনঃ অবৈধ দখলদার বুলবুল-হিটলার গংদের আড়াই মাসে কয়েক লক্ষ টাকা ঘাপলা, ক্ষোভে ফুঁসছে সদস্যরা
বিকল্প পণ্য হিসেবে সিমেন্টের বস্তা থেকে তৈরি প্লাস্টিক ব্যাগ এবং পলিপ্রোপিলিনের টিস্যু ব্যাগের ব্যবহার বেড়েছে। তবে এসব পণ্য ব্যয়বহুল হওয়ায় বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়েই সমস্যায় পড়ছেন। শেফালি বেগম নামের একজন ক্রেতা বলেন, “ব্যাগ নিয়ে আসলেও অনেক জায়গায় পলিথিন ব্যাগ ছাড়া কেনাকাটা সম্ভব হয় না।”
পরিবেশের ক্ষতি এড়াতে কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি বিকল্প ব্যাগ সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করার দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।