spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদসারা বাংলারামগঞ্জে গ্রাহকের ১০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ডিপিও উদ্যোক্তা আনোয়ার

রামগঞ্জে গ্রাহকের ১০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ডিপিও উদ্যোক্তা আনোয়ার

মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় মেয়াদী সঞ্চয়পত্র, জাল চেক, এবং ভূয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে সহস্রাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েছেন উপজেলা ডাকঘর অফিসের উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন। চার বছর ধরে এই প্রতারণার মাধ্যমে তিনি এই অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্রের নামে টাকা জমা রেখে প্রতারণার শিকার হন। আনোয়ার তাদের জাল সঞ্চয়পত্র ও চেক দিয়ে প্রতিশ্রুতির লভ্যাংশের ম্যাসেজ দু-এক মাস পাঠালেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। প্রতারণার বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর আনোয়ার লাপাত্তা হয়ে যান।

ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের লক্ষ্মীপুর জেলা ব্যবস্থাপক নেয়ামত উল্যা আনোয়ারের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চেক ডিজঅনারসহ তিনটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর ১২৬/২৪, ১৪৪/২৪, ১৯৫/২৪, যা বর্তমানে পিবিআই এবং জেলা ডিবি অফিস তদন্ত করছে।

আনোয়ার হোসেন রামগঞ্জ উপজেলা ডাকঘর অফিসে উদ্যোক্তা হিসেবে কর্মরত থাকাকালে ব্যাংক এশিয়ার অনুমোদিত এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করেন। তিনি গ্রাহকদের মেয়াদী সঞ্চয়পত্র এবং ডিপোজিট স্কিমে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করতেন। তার প্রস্তাবে প্রলুব্ধ হয়ে গ্রাহকরা লাখ লাখ টাকা তার হাতে তুলে দেন। আনোয়ার গ্রাহকদের হাতে ডাকঘর অফিস থেকে জাল সঞ্চয়পত্র ও চেকের ফটোকপি ধরিয়ে দিতেন।

ফাতেমা আক্তার, যিনি আনোয়ারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা জমা দিয়েছিলেন, বলেন, “আমরা সঞ্চয়পত্রের নামে টাকা জমা দিয়েছিলাম, কিন্তু এখন জানতে পারছি সবই ভূয়া। আমার স্বামীর কাছ থেকেও ১০ লাখ টাকা নিয়েছে।” একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন ইয়াসমিন আক্তার এবং রাবেয়া বেগম।

রামগঞ্জ উপজেলা ডাকঘর অফিসের পোস্টমাস্টার মো. সিরাজ উদ্দিন জানান, “আমি ২০২৩ সালে যোগদান করেছি। আনোয়ারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না। তবে এটি পূর্ববর্তী পোস্টমাস্টারদের সময়ে হয়েছে।”

আরও পড়ুনঃ ফুলবাড়ীতে পৃথক অভিযানে ভারতীয় গরু ও জিরাসহ দুই চোরাকারবারি আটক

ব্যাংক এশিয়ার জেলা ব্যবস্থাপক জানান, “গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা না হওয়ার বিষয়টি আমরা নজরে আনি। তখন আনোয়ারের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়। পরে তিনি পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে।”

রামগঞ্জ থানার ওসি মো. আবুল বাশার বলেন, “এ বিষয়ে থানায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ হয়নি। আদালতের ওয়ারেন্টের কপি হাতে পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনায় গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। তারা দ্রুত আনোয়ারকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন।