মোঃ আবু হায়াৎ, সুনামগঞ্জ (জেল) প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে চোরাচালান ও চাঁদাবাজির অভিযোগে চিহ্নিত যুবলীগ নেতা রফ মিয়া (৩৬) কে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে তাহিরপুরের ট্যাকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মোঃ আবুল কামাল চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশ দল তাকে সীমান্তের কলাগাঁও বাজার থেকে আটক করে।

রফ মিয়া সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে, যার মধ্যে একটি সিলেটের মামলা এবং তাহিরপুর থানায় নাশকতার অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত। তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ দিলোয়ার হোসেন জানান, “১৬ ডিসেম্বরের নাশকতার মামলায় তাকে আটক করা হয়েছে। রফ মিয়া সীমান্ত এলাকার চোরাচালান সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল এবং সে চিহ্নিত চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচিত।”

স্থানীয় এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, কলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা রফ মিয়া একসময় আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছিলেন। তবে গত কয়েক বছরে যুবলীগ নেতার পরিচয়ে চোরাকারবারিদের নিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এ সিন্ডিকেট সীমান্ত দিয়ে কয়লা, চিনি, মাদকদ্রব্য, এবং ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর কাজে সক্রিয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রফ মিয়া বিভিন্ন সংস্থার সোর্স পরিচয়ে চোরাচালান থেকে বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদায় করতেন। চাঁদাবাজি ও চোরাচালানের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে তিনি সুনামগঞ্জ শহরে বিলাসবহুল বাড়ি ও গাড়ি কেনেন। তার প্রভাব এতটাই বেড়েছে যে সীমান্তে তাকে কেন্দ্র করে একাধিক অপকর্ম চালানো হতো।

আরও পড়ুনঃ পশ্চিমাঞ্চল রেল: আ’লীগের দোসররা স্বপদে বহাল, ৪ কোটি টাকার চুক্তি সম্পন্ন

রফ মিয়ার আটকের খবরে সীমান্ত এলাকার মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের নানা অভিযোগ ছিল। অনেকেই তার অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, রফ মিয়াকে রবিবার (১২ জানুয়ারি) আদালতে হাজির করা হবে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং সীমান্ত এলাকায় তার সিন্ডিকেটের বিষয়ে তদন্ত চলছে।

তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ দিলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, “সীমান্ত এলাকার চোরাচালান ও চাঁদাবাজি দমনে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। এ ধরনের অপরাধ দমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।”