
রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার বিচারের দাবিতে এবং ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা বন্ধে কুড়িগ্রামে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ শীর্ষক পদযাত্রা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় কুড়িগ্রামের কলেজ মোড় বিজয়স্তম্ভ থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
পদযাত্রার শুরুতে সীমান্তে হত্যার শিকার সব শহীদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে লিফলেট বিতরণ, পথসভা এবং ফেলানীর বাড়িতে গিয়ে কবর জিয়ারত করা হবে। পদযাত্রা শেষে নাগেশ্বরীর রামখানা এলাকায় একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হবে।
আয়োজক সূত্র জানায়, পদযাত্রায় পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, ১. সীমান্ত হত্যা বন্ধ করে ফেলানীসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে সম্পন্ন করা। ২. সীমান্তে মরণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে আন্তর্জাতিক চুক্তি করা। ৩. শহীদ ফেলানীর নামে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক ভবনের নামকরণ। ৪. নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বাতিল করে সাম্য, ন্যায্যতা ও মর্যাদার ভিত্তিতে নতুন পররাষ্ট্রনীতি গঠন। ৫. প্রান্তিক জেলা কুড়িগ্রামের দারিদ্র্য নিরসনে নদী সংস্কার এবং চরের জীবন-জীবিকা উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদ, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, নির্বাহী সদস্য রিফাত রশিদ এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদেরও পদযাত্রায় অংশ নেন।
আরও পড়ুনঃ মাগুরায় কর্মী সম্মেলনে জামায়াতের আমীর: চাঁদাবাজি রোধ ও মানবিক সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের দালালদের সহায়তায় বাড়ি ফেরার পথে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে ফেলানী নিহত হন। তার মরদেহ দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে ছিল। সেই ছবি দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম এবং মানবাধিকারকর্মীদের মধ্যে তীব্র সমালোচনার ঝড় তোলে। ঘটনার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার আজও সম্পন্ন হয়নি।
পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের পাশাপাশি সীমান্তের সব হত্যাকাণ্ডের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।