মো: মামুনুর রশিদ, আমতলী(বরগুনা)প্রতিনিধিঃ বরগুনার আমতলী উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব একে অপরকে দোষারোপ করে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রথমে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় সংবাদ সম্মেলন করেন আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. তুহিন মৃধা।

পরে দুপুর ২টায় উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম মামুন (ভিপি মামুন) ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. কবির উদ্দিন ফকির।

প্রথমে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তুহিন মৃধা বলেন, “বহিষ্কৃত সন্ত্রাসী জালাল উদ্দিন ফকির, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম মামুন এবং পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কবির উদ্দিন ফকির এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জমি দখলসহ নানা অপরাধে তারা জড়িত।”

তিনি অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্টের পর জালাল উদ্দিন ফকিরের দুই ছেলে রাহাত ফকির ও ফরহাদ ফকিরের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করা হয়। এই বাহিনী বাসস্ট্যান্ড দখল, সড়কে চাঁদাবাজি এবং নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। রাহাত ফকিরের বিরুদ্ধে ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে বলেও দাবি করেন তুহিন মৃধা।

এছাড়া, ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও জালাল উদ্দিন ফকির মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে এক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল আহম্মেদ খান, অ্যাডভোকেট নাশির উদ্দিন তালুকদার, কামরুজ্জামান হিরু মৃধা, তরিকুল ইসলাম টারজান, বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম সোহেল তালুকদার, উপজেলা কৃষক দল সভাপতি জাহাঙ্গির আলম, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলাউদ্দিন হাওলাদারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

পরে দুপুর ২টায় পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম মামুন (ভিপি মামুন) বলেন, “ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর তুহিন মৃধা ও যুবদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সামসুল হক চৌকিদার এলাকায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও জমি দখল করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তাদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বাসস্ট্যান্ড কাউন্টার ও সিএনজি স্ট্যান্ড দখল করতে গিয়ে তুহিন মৃধার অনুসারীরা জালাল ফকিরের দুই ছেলে রাহাত ফকির ও ফরহাদ ফকিরসহ সাতজনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। আহতরা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুনঃ রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ কর্মী আটক, পুলিশের হেফাজতে

পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কবির উদ্দিন ফকির বলেন, “তুহিন মৃধা ও সামসুল হক চৌকিদার বিএনপির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে দলকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের কারণেই আমতলী উপজেলা বিএনপিতে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিল্টন বিশ্বাস, জামাল খান, রুহুল আমিন টিপু, উপজেলা যুবদল যুগ্ম আহ্বায়ক মাঈনুদ্দিন মামুন, আবু সাইদ জুবায়েরী, বরগুনা জেলা যুবদল সহ-সম্পাদক নিজাম উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতারা।

তুহিন মৃধা তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “তারা নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমতলীর সবাই জানে।”

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, “আমতলীর বিষয়ে আমি অবগত আছি। তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”