
মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম নগরীর আসকারাবাদ এলাকায় আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি শরিফুজ্জামান ও তাঁর দুই স্ত্রীর করা একাধিক হয়রানিমূলক মামলার শিকার হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী রাশিদা আক্তার।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) নগরীর আসকারাবাদস্থ মক্কা টাওয়ারে গ্লোবাল সঞ্চয়ন সমবায় সমিতির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে তিনি এসব অভিযোগ তোলেন।
রাশিদা আক্তার জানান, তিনি ম্যাক্স কর্মজীবী কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে এক গ্রাহক মো. নাছির উদ্দিন ঋণ গ্রহণ করেন এবং জামানত হিসেবে নির্দিষ্ট নথিপত্র ও চেক জমা রাখেন। পরবর্তীতে নাছির উদ্দিন ঋণের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি রাশিদার ব্যক্তিগত বেতনের টাকা কর্তন করে ও নগদ অর্থ গ্রহণের মাধ্যমে ঋণ আদায় করলেও, গ্রাহকের জামানত হিসেবে রাখা নথিপত্র ও চেক ফেরত দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার জানানো হলেও কোনো সমাধান মেলেনি। বরং শরিফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী মরিয়ম বেগম রাশিদার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এসব কারণে তাঁর সংসার ভেঙে গেছে এবং পরে তিনি চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন। কিন্তু অব্যাহতি পাওয়ার এক বছর পর তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে মিথ্যা মামলা ও হয়রানি শুরু হয়।
রাশিদা আক্তার বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার জিডি ও মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সর্বশেষ ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আরও দুটি নতুন মামলা করা হয়, যেখানে তাঁকে বিভিন্ন অপরাধে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ইবিতে তৃতীয়বারের মতো কুহেলিকা উৎসব, তরুণ উদ্যোক্তা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন
তিনি অভিযোগ করেন, শরিফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীদের প্রভাব ও ক্ষমতার দাপটে তাঁকে প্রতিনিয়ত হয়রানি করা হচ্ছে। তাঁদের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের একাধিক সমবায় প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা সংস্থার মাধ্যমে মামলা ও প্রশাসনিক চাপ প্রয়োগ করে তাঁকে হেনস্তা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে রাশিদা আক্তার প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবি জানান। তিনি বলেন, “আমি আর সহ্য করতে পারছি না। আমার জীবনে অশান্তি নেমে এসেছে। আমি চাই প্রশাসন এই হয়রানি বন্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিক।”
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী রাশিদা আক্তারের পাশাপাশি তাঁর পরিবার ও অন্যান্য ভুক্তভোগীরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা সকলেই মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি শরিফুজ্জামান ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।