মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা নারীসহ অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার ঘটনায় আটক হওয়ার পর ভিডিও ভাইরাল হয়। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পরই সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাংবাদিকের নাম অলিউল্লাহ, যিনি দৈনিক মুক্ত খবর ও শ্যামল বাংলা পত্রিকায় কাজ করেন।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে গোদাগাড়ী উপজেলার ইউএনও'র বাসার কাজের মেয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত থাকার সময় এলাকাবাসী ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানকে হাতেনাতে আটক করে। পরে তিনি বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে মুক্তি পান। কিন্তু এ ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে এবং সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলার আবাসিক ভবনে এক নারীসহ বিবস্ত্র অবস্থায় ধরা পড়েন হাফিজুর রহমান। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সংবাদ প্রচার বন্ধ না করায় তিনি সাংবাদিক অলিউল্লাহসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। অভিযোগ উঠেছে, মামলাটি কোনো তদন্ত ছাড়াই গ্রহণ করা হয়েছে এবং এতে মোটা অঙ্কের লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, "উক্ত ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন তদন্ত হবে। চাপে পড়ে মামলা নিতে হয়েছে।"
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ বলেন, "এটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ভাইরাল ভিডিও নিয়ে অফিসিয়ালি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখবেন।"
আরও পড়ুনঃ জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দেশসেরা কুড়িগ্রামের সুবর্ণা
এদিকে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের ঘটনায় রাজশাহীর সাংবাদিক সংগঠনগুলো তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা এ ঘটনাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং সুষ্ঠু বিচার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে নারী কেলেঙ্কারির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে তিনি বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। স্থানীয়দের দাবি, ইউএনও কার্যালয়ের অবৈধ লেনদেনের মূল ব্যক্তি হাফিজুর রহমান, যার কারণে তিনি নানা অনিয়মের পরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।