মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক যুবলীগ কর্মীকে পুলিশের মাধ্যমে মুক্তির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানার সামনে অবস্থান নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি করছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করতে গোপনে লীগপন্থীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে কিছু পুলিশ কর্মকর্তা।
গত ৪ মার্চ (মঙ্গলবার) রাত ১০টার দিকে নগরীর বোয়ালিয়া থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় বারবার অভিযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। তবে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ কর্মী বিচ্ছাদকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়েছিল। কিন্তু এসআই আকবর আলী রহস্যজনকভাবে তাকে মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন।
বৈষম্যবিরোধী রাজশাহী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর মুখপাত্র আরশি হক বলেন, "আমরা ৫ আগস্টের পর থেকে ভিডিও-ছবিসহ থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো ব্যবস্থা পাইনি। তবে যৌথ বাহিনীর অভিযানে সাহস পেয়ে আমরা তথ্য সংগ্রহ করে অভিযুক্তকে ধরে থানায় দিই। পুলিশ আমাদের জানায়, তাকে রাজশাহীতে শহীদ সাকিব আনজুম হত্যা মামলায় আটক দেখানো হবে। আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলাম, কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রহস্যজনকভাবে তাকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। এটি পুলিশের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়।"
এদিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এসআই আকবর আলী আগে শিরোইল ফাঁড়ির ইনচার্জ ছিলেন। সে সময় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আঁতাত ও রাজনৈতিক হয়রানির অভিযোগ উঠলে তাকে দামকুড়া থানায় বদলি করা হয়। কিছুদিন আগে তিনি আবার বোয়ালিয়ায় ফিরে আসেন।
সম্প্রতি নগরীর রানীনগর এলাকায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করলে তাকে ছাড়াতে গিয়ে এসআই আকবর স্থানীয়দের রোষানলে পড়েন। গণমাধ্যমের সহযোগিতায় তিনি ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপরও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
আরও পড়ুনঃ রাজশাহী কলেজ ছাত্রাবাসে বেড়েছে মশার উপদ্রব, নেই কার্যকর পদক্ষেপ
এসআই আকবর আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "তার (আটক ব্যক্তির) বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। যৌথ বাহিনী কেন তাকে আটক করলো, কী তথ্য-প্রমাণ ছিল, তা আমার জানা নেই। মামলা না থাকায় তাকে সন্দেহজনকভাবে আটক দেখানো হয়েছিল।"
বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদি মাসুদ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বোয়ালিয়া থানার এডিসি হাফিজুর রহমান জানান, "একটু ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন হয়েছে। তাকে আটক করার প্রক্রিয়া চলছে। আপনারা নিউজ করলে সে আত্মগোপনে চলে যাবে, তাই বিষয়টি ধামাচাপা দিন। খুব শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।"
শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার না করলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।