
ইব্রাহীম হোসেন, দেবহাটা প্রতিনিধিঃ টেকসই নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনা (এসআরএম) এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় দেবহাটা উপজেলা পানি কমিটির ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৫ মার্চ) উত্তরণ ও দেবহাটা উপজেলা পানি কমিটির আয়োজনে পারুলিয়াস্থ উত্তরণ-সীমান্ত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় দেবহাটা উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি আবুল ফজল-এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কমিটির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আনছার আলী, হামিদা পারভীন, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফসার আলী ও এনামুল হক, প্রভাষক আবু তালেব, দেবহাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি মীর খায়রুল আলম, রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি আর.কে বাপ্পা, উত্তরণের প্রজেক্ট অফিসার দিলীপ সানা, সফল প্রকল্পের উপজেলা ব্যবস্থাপক নাজমুল বাশার এবং উত্তরণের উপজেলা ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সভা শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি লিখিত আবেদন জমা দেওয়া হয়। এতে বেতনা ও মরিচ্চাপ নদী অববাহিকার জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি ইছামতি নদীর সাথে লাবণ্যবতী ও সাপমারা নদীর অবাধ পুনঃসংযোগ প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।
লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ৩০-৩৫ বছর ধরে সাতক্ষীরার বেতনা ও মরিচ্চাপ নদী অববাহিকা অঞ্চলে জলাবদ্ধতা সমস্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এখানকার নিম্নাঞ্চল ৩-৬ মাস জলমগ্ন থাকে, কিছু এলাকায় ৭-৮ মাস পর্যন্ত জলাবদ্ধতা স্থায়ী হয়। এতে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। বহু পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা আত্মীয়স্বজনের বাসায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
আরও পড়ুনঃ তিন দফা দাবি উত্থাপন করে রাবি শিক্ষার্থীদের রেল অবরোধ স্থগিত
জলাবদ্ধতার ফলে আমন ধানের চাষাবাদ ব্যাহত হয়, মাছের ঘের নষ্ট হয়ে যায়, পানি বাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়, খাদ্য সংকট ও কর্মসংস্থানের অভাব দেখা দেয়, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হয় এবং সামগ্রিকভাবে জনজীবন অচলাবস্থার মুখে পড়ে।
দাবি অনুযায়ী: পোল্ডার নং ১, ২, ৬-৮ এবং ৬-৮ (এক্সটেনশন) প্রকল্পের আওতায় বেতনা ও মরিচ্চাপ অববাহিকায় টিআরএম বাস্তবায়ন করতে হবে। ইছামতি নদীর সঙ্গে লাবণ্যবতী ও সাপমারা নদীর সংযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। সকল সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বয় নিশ্চিত করে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
পানি কমিটির সদস্যরা দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব দাবির বাস্তবায়ন না হলে বড় পরিসরে আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন বলে জানান।