spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদসারা বাংলারাজশাহীতে পলাতক আ.লীগ নেতাদের আশ্রয়দাতা বাচ্চু আর্ট নিয়ে বিতর্ক

রাজশাহীতে পলাতক আ.লীগ নেতাদের আশ্রয়দাতা বাচ্চু আর্ট নিয়ে বিতর্ক

মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর অলকার মোড়ে অবস্থিত ‘বাচ্চু আর্ট’ একসময় জেলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত থাকলেও বর্তমানে এটি নানা অপকর্মের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে এখানে চলত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও মদের আসর। এখন আবারো অভিযোগ উঠেছে, মামলার কারণে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্রয় দেওয়া এবং রাজশাহীতে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির ষড়যন্ত্র করার বিষয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাচ্চু আর্টের মালিক বাচ্চু ও তার ভাগিনা শুভ দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গী হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছেন। বাগমারা উপজেলার আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা, বিশেষ করে টেন্ডারবাজি, ভূমিদস্যুতা, ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের মতো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল বাচ্চুর।

ব্যবসার নামে তারা বিভিন্ন নেতাদের চাঁদাবাজির কাজে সহায়তা করতেন। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল করা, সরকারি কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখানো, এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করার জন্য ভয় দেখানো হত এই প্রতিষ্ঠান থেকে। এমনকি রাতে মদের আসর বসিয়ে রাজনৈতিক পরিকল্পনা করা হতো।

গত ৫ আগস্টের পর থেকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের জেরে রাজশাহীর একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা গা ঢাকা দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, বাগমারার আলোচিত নেতা ও চেয়ারম্যান জান মোহাম্মদ এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী সেন্টুর অনুসারীরা এখন বাচ্চুর আশ্রয়ে রয়েছেন। বাচ্চু এবং তার ভাগিনা শুভ বিএনপি নেতাদের সঙ্গেও অর্থের বিনিময়ে সম্পর্ক বজায় রেখেছেন বলে জানা গেছে।

অলকার মোড়ের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বাগমারা থেকে পালিয়ে আসা নেতাদের পিএ সুইটকে প্রায়ই বাচ্চুর দোকানে দেখা যেত। এছাড়া সাবেক চেয়ারম্যান জান মোহাম্মদের ছেলে এবং তার পিএ রায়হানকেও বিভিন্ন সময় সেখানে দেখা গেছে।

বাচ্চুর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার ব্যবসার আড়ালে চাঁদাবাজি ছাড়াও কর্মচারীদের শোষণ করেছেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, “আমি কাজ করেছিলাম, কিন্তু টাকা দেইনি। টাকা চাইতে গেলে সন্ত্রাসী দিয়ে ভয় দেখিয়েছে।”

বহু মানুষকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে শুভ ও বাচ্চুর বিরুদ্ধে। এমনকি তারা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের নাম ব্যবহার করে নানা অনিয়ম করে আসছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ‘হা হা’ রিয়েক্টের জেরে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

স্থানীয়রা জানান, বাচ্চু এবং শুভ এখন নিজেদের রক্ষা করতে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করেছেন। বিএনপির সহযোগী সংগঠনের এক নেতা বলেন, “আগে আমাদের ওপর অনেক অত্যাচার করেছে। এখন বিএনপির নাম ভাঙিয়ে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।”

এই বিষয়ে বাচ্চু ও শুভর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে সংবাদ প্রকাশ হলে অফিসে হামলা করানোর হুমকি দেন এবং বিএনপি নেতাদের দিয়ে ফোন করে বিরক্ত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

এখন প্রশ্ন উঠছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন কেন এই বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? স্থানীয়দের দাবি, বাচ্চু ও শুভর মতো অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।