আশিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের নাগগাঁতী দক্ষিণপাড়া গ্রামে মসজিদের উন্নয়ন কাজকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত কুলছুম খাতুন (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। দীর্ঘ ৪৩ দিন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। নিহত কুলছুম ওই গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, গত মাসে মসজিদের মানোন্নয়নকে কেন্দ্র করে আব্দুর রহমান, শাহ আলম, ছোলেমান, হালিম শেখ ও আব্দুল আজিজের নেতৃত্বে একপক্ষ, অপরদিকে রফিকুল ইসলাম গংয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ৪ জন গুরুতর আহত হন। এর মধ্যে কুলছুম খাতুন দা দিয়ে কোপানো গুরুতর আঘাত নিয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সংঘর্ষে রফিকুল ইসলামের বাবা মজিদ শেখের হাত ভেঙে যায় এবং তার ভাইদেরও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। কুলছুমের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহত কুলছুমের ১৩ বছর বয়সী কন্যা মারিয়া ও ৭ বছর বয়সী মায়শা কান্নায় ভেঙে পড়ে, তাদের আর্তনাদে পুরো গ্রাম ভারী হয়ে ওঠে। কেউই মেনে নিতে পারছিল না এক মায়ের এমন করুণ মৃত্যু।
নিহতের স্বজনদের দাবি, সংঘর্ষে মামলার ২ নম্বর আসামি শাহ আলমের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্রের আঘাতেই কুলছুম খাতুনের মৃত্যু হয়েছে। তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি—ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। এ ঘটনায় নিহত কুলছুমের স্বামী মোঃ রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত পক্ষ আব্দুর রহমান গংদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে একটি লিখিত বার্তায় তারা জানান, "ঘটনাটি আমরা গ্রামের মুরুব্বিদের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করছি।"
আরও পড়ুনঃ রায়পুরায় ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
এ বিষয়ে বেলকুচি থানা অফিসার ইনচার্জ জাকেরিয়া হোসেন বলেন, “নাগগাঁতী দক্ষিণপাড়ায় মসজিদের কাজকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে রফিকুল ইসলাম একটি মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। কুলছুম খাতুন যেহেতু ঘটনার ভিকটিম এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন, তাই মামলাটি ৩০২ ধারায় রূপান্তরের প্রস্তুতি চলছে। আমরা সংশোধিত ধারায় তদন্ত শেষে আদালতে রিপোর্ট দাখিল করবো।”
এদিকে গ্রামবাসী ও কুলছুমের স্বজনরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেছেন।