
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নে এক বাবা ও তার ছয় বছরের মেয়েকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে আপন ভাই ও চাচাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের গোমস্তাপুর আমলী আদালতের বিচারক সারমিন খাতুন এই নির্দেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো দুই ব্যক্তি হলেন—বসনীটোলা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মো. ফয়েজ রহমান (৫০) ও মৃত হাজী দানেস উদ্দিনের ছেলে মো. নেফাউর রহমান (৬০)। তারা সম্পর্কে আপন চাচা-ভাতিজা।
অপহরণের শিকার ব্যক্তি মো. ফয়সাল রহমান সোহেল (৪০) ফয়েজ রহমানের ছোট ভাই এবং তার মেয়ে মোসা. ফামিয়া খাতুন (০৬)। ২০২৩ সালের ১৯ আগস্ট রাতের আঁধারে সোহেলকে একটি কালো মাইক্রোবাসে করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকালে চাচা নেফাউর রহমান ফামিয়াকে তার নানাবাড়ি থেকে কৌশলে নিয়ে যান।
এরপর টানা চারদিন বাবা-মেয়ে নিখোঁজ থাকলে পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। ২৩ আগস্ট স্থানীয় মসজিদে এক নামাজ শেষে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করা হলে চাচা নেফাউর দাবি করেন, সোহেল ভালো আছে এবং রিহ্যাব সেন্টারে রয়েছে। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সোহেলের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
বাধ্য হয়ে সোহেলের সাবেক স্ত্রী সায়লা সারমিন শোভা গত ২৮ আগস্ট গোমস্তাপুর থানায় অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে ফয়েজ রহমান ও নেফাউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
সায়লা সারমিন অভিযোগ করে বলেন, সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যেই তার সাবেক স্বামী ও মেয়েকে অপহরণ করে নির্যাতন চালিয়েছে আসামিরা। এ ঘটনায় ন্যায়বিচারের আশায় তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন।
অপহৃত ফয়সাল রহমান সোহেল বলেন, “আমার আপন ভাই ও চাচা আমাকে অপহরণ করে দিনের পর দিন নির্যাতন চালিয়েছে। আমার ছোট্ট মেয়েকেও ছাড়েনি। এখন আমি আদালতের প্রতি আস্থাশীল।”
আরও পড়ুনঃ ভালুকায় ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে যুবক আটক
বাদিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আহমেদ নাজিব জানান, চার্জশিটে আসামিদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময় আসামিরা জামিনে থাকলেও চার্জশিটে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাদের জামিন বাতিল করা হয়।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।