spot_img

― Advertisement ―

spot_img

পদ্মানদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ জেলের মরদেহ উদ্ধার

মোঃ আব্দুল আলিম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় পদ্মানদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া জেলে আমিনুল ইসলাম (৫০)-এর মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও...
প্রচ্ছদসারা বাংলারাজশাহীতে শিল্পে ও সাহিত্যে বাংলা নববর্ষ উদযাপন

রাজশাহীতে শিল্পে ও সাহিত্যে বাংলা নববর্ষ উদযাপন

মোঃ আব্দুল আলিম, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে রাজশাহীতে সাহিত্য ও শিল্পের এক প্রাণবন্ত মিলনমেলা বসেছিল বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের চত্বরে। রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতি ও নববর্ষের প্রেক্ষাপটে সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ করে দেয় এই আয়োজন।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল থেকেই পুরো এলাকাটি মুখর ছিল শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাংস্কৃতিক অনুরাগীদের উপস্থিতিতে।

গণগ্রন্থাগারের সহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান জানান, প্রতিযোগিতায় মোট ১৬৭ জন নিবন্ধন করেন এবং সরাসরি অংশ নেন ৯৬ জন প্রতিযোগী। তিনটি বয়সভিত্তিক গ্রুপে বিভক্ত রচনা প্রতিযোগিতায় ছিল পৃথক বিষয়: পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য ‘বৈশাখী মেলা’, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য ‘উৎসবে, আনন্দে বর্ষবরণ’ এবং স্নাতকোত্তর বা সর্বসাধারণের জন্য ‘বাংলা সংস্কৃতির বিকাশে বাংলা নববর্ষের প্রভাব’। সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চলে রচনার মূল পর্ব।

শিক্ষার্থীদের কলমে উঠে এসেছে বাঙালির বৈশাখী উৎসবের ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং সামাজিক গুরুত্ব। কেউ তুলে ধরেছে গ্রামীণ বৈশাখী মেলার বর্ণনা, কেউবা লিখেছে শহরের শোভাযাত্রার গল্প, আবার কেউ বিশ্লেষণ করেছে নববর্ষের রাজনৈতিক গুরুত্ব।

রচনা শেষে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, যেখানে শিশু শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। তাদের আঁকা ছবিতে উঠে আসে মঙ্গল শোভাযাত্রা, পান্তা-ইলিশ, গ্রামীণ দৃশ্যপট, ঘুড়ি উড়ানো আর বাঙালি সংস্কৃতির নানা রঙ। একেকটি ছবিই যেন হয়ে ওঠে বাংলার গল্প বলা জীবন্ত ফ্রেম।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার তার আঁকা ছবিতে মঙ্গল শোভাযাত্রার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জানায়, “এখানে সবাই একসাথে গান গাইছে আর মুখে হাসি।”

লাইব্রেরির সামনে উপস্থিত অভিভাবকদের মধ্যেও দেখা গেছে প্রবল উৎসাহ। অনেকে মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করছিলেন। পুরো আয়োজনটি যেন পরিণত হয়েছিল এক খোলা আকাশের উত্সবে।

আরও পড়ুনঃ ঈদের পরে সবজির বাজারে আগুন, রামগঞ্জে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

সহকারী পরিচালক রোকনুজ্জামান বলেন, “শুধু উৎসব নয়, এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা শিশু-কিশোরদের শিকড়ে ফিরিয়ে নিতে চাই। তারা যেন তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ইতিহাস জানতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।” ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এমন আয়োজন করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও সুধীজনেরা। তারা বলেন, “সরকারি গ্রন্থাগার কেবল বই পড়ার জায়গা নয়, বরং তা হতে পারে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রবিন্দু।”

এই আয়োজন প্রমাণ করে, বাংলা নববর্ষ শুধু একটি দিনের উৎসব নয়—এটি হতে পারে নতুন প্রজন্মকে ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেওয়ার এক চিরন্তন প্রেরণা। রাজশাহীতে এ ধরনের উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের কল্পনা ও সংস্কৃতিবোধ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।