মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ সাবেক সংসদ সদস্য ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে প্রতিটি গৌরবময় অর্জনে শ্রমিকজনতার অবদান অনস্বীকার্য। একাত্তরের যুদ্ধে যারা সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন তাদের অনেকে ছিলেন শ্রমিক। আজও দেশের উৎপাদন ব্যবস্থার মেরুদণ্ড শ্রমজীবী মানুষ। তাই শ্রমিকদের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও সন্তানের শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।”
বুধবার (১ মে) আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে অনুষ্ঠিত র্যালি ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
তিনি আরও বলেন, “শ্রমিক-মালিক ভেদাভেদ নয়, বরং সহাবস্থান ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে শ্রমিকবান্ধব এবং ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গঠন করতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান এবং সঞ্চালনা করেন মহানগর সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমীন।
এতে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম-৮, ৯, ১০ ও ১১ আসনের জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা, নগর ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ, ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠক ও বিভিন্ন শ্রমিক নেতারা। সমাবেশে বক্তারা শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ এবং অবাধ সংগঠনের পরিবেশ তৈরির ওপর জোর দেন। তারা বলেন, অতীতে বিভিন্ন সময় শ্রম অধিদপ্তরের কিছু কর্তাব্যক্তির অজুহাতে শ্রমিকদের সংগঠন গঠন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এখন সময় এসেছে সেই অন্যায়ের প্রতিকার করার।
সমাবেশে শ্রম অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা বলেন, শ্রমিকদের যেন আর বাধা দেওয়া না হয়, তারা যেন সংগঠিত হয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ের পথে এগিয়ে যেতে পারে—এটা নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ কুড়িগ্রামে নিজের পাতা ফাঁদেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কৃষকের মৃত্যু
আলোচনায় শ্রমিক নেতা শাহজাহান চৌধুরী বলেন, “জুলাই ৩৬ এবং চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সামনে একটি ঐতিহাসিক সুযোগ এনে দিয়েছে। এই আত্মত্যাগ যেন ব্যর্থ না হয়, সেজন্য শ্রমিকদের প্রস্তুতি নিতে হবে। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস আমাদের সেই প্রেরণার উৎস।”
সভাপতির বক্তব্যে এস এম লুৎফর রহমান বলেন, “শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে আমরা কোনো আপস করবো না। যেখানে শ্রমিক নির্যাতিত, সেখানে ফেডারেশন উপস্থিত হবে।”
সমাবেশ শেষে হাজারো শ্রমিকজনতার অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি পুরাতন রেলস্টেশন থেকে শুরু হয়ে নিউমার্কেট, কোতোয়ালি মোড়, লালদীঘি হয়ে আন্দরকিল্লা চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমগ্র আয়োজনেই শ্রমিকদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ও ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে তাদের অধিকার রক্ষার দাবি ছিল স্পষ্ট ও জোরালো।